শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ০৫:২৬ সকাল
আপডেট : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ০৫:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১]মাইন্ড এইড হাসপাতালের অন্দরে যা দেখা গেল

নিউজ ডেস্ক : [২]ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের দোতলার একটি কক্ষে নির্যাতন চালানো হয়েছিল মানসিক রোগাক্রান্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমের উপর, যাতে তার মৃত্যু ঘটেছে। আদাবর থানার ঠিক পেছনে তিনতলা ভবনে গড়ে ওঠা হাসপাতালটির দোতলার ওই কক্ষে যেতে নিচতলা থেকে অন্তত পাঁচটি দরজা পার হতে হয়। কক্ষটি খুবই ছোট দৈর্ঘ্যে ৪ ফুট এবং প্রস্থে ৬ ফুটের মতো।

[৩]ভবনের দোতলার পূর্ব দক্ষিণ দিকে যে বারান্দা, সেই বারান্দার মধ্যে দেওয়াল তুলে বিশেষ পদ্ধতিতে এই ঘরটি করা হয়েছে। কক্ষটি সাউন্ডপ্রুফ করতে ঘরের দেওয়ালগুলোতে স্পঞ্জ ও মোটা কাপড়ের প্রায় ৪ ইঞ্চি স্তর রয়েছে। যে একটি দরজা আছে কক্ষটিতে ঢুকতে, সেই দরজার ভেতরের অংশেও স্পঞ্জ ও মোটা কাপড় লাগানো।

[৪]কক্ষটিতে কোনো জানালা নেই। একটন ওজনের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র রয়েছে। ছাদের পূর্ব ও দক্ষিণ কোনে উপরে রয়েছে একটি সিসি ক্যামেরা।

[৫]পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাবেক পরিচালক তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস বলেন, “মানসিক রোগীদের জন্য কিছু কিছু দেয়ালে প্যাডেড থাকা দরকার। কেননা রোগীরা যেন দেয়ালে মাথা ঠুকে নিজেকে আহত করতে না পারে। আর মেঝেও নরম থাকা দরকার, কেননা অনেক সময় রোগীরা শক্ত মেঝেতে নিজেকে কোনো না কোনোভাবে ক্ষতবিক্ষত করে থাকে।”

[৬]তবে মাইন্ড হাসপাতালের কক্ষের আকৃতির বিষযে তিনি বলেন, “রোগীদের জন্য যে কোনো কক্ষতেই দরজা-জানালা থাকতে হবে। বদ্ধ ঘর চলবে না। আর এত ছোট কক্ষ থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।” আর মানসিক রোগীকে শারীরিক নির্যাতন করা কোনোভাবেই যাবে না, বলেন তিনি।

ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন মাইনুল আহসান বলেন, “কোনো মানসিক রোগীকে এ ধরনের ক্ষুদ্র কক্ষে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো বিধান নেই।”

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুণ অর রশিদ বলেন, “পুরো হাসপাতালটি একটি জেলখানার মতো। অবরুদ্ধ, কোনো খোলামেলা জায়গা নেই। ভবনের প্রতিটি জায়গা ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি বারান্দাটি আর বারান্দা রাখা হয়নি শ্বাসরোধ করার মতো ঘর বানানো হয়েছে।”

এই বাড়িটির নিচতলার অর্ধেক অভ্যর্থনা এবং কাউন্টার। দোতলায় ঢুকেই মাঝে ডাইনিং স্পেসের জায়গায় একটি পুল বোর্ড। দুই পাশে দুইটি করে চারটি ঘর। যেখানে ৬-৭টি করে বিছানা রয়েছে। তিন তলা একটু ভিন্ন। পড়ার জায়গা রয়েছে, দুইটি কেবিন রয়েছে। একটি কক্ষে ৬টি বিছানার ওয়ার্ড রয়েছে।

বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার আনিসুল করিম (৩৫) মানসিক চিকিৎসার জন্য সোমবার আদাবরের ওই হাসপাতালে যান। কিন্তু চিকিৎসার বদলে সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে দোতালায় নেওয়ার সময় তিনি স্বাভাবিকই ছিলেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে হেঁটেই তিনি উপরে উঠেন বলে জানান হাসপাতালের কর্মচারী শারমিন আক্তার। “কোনো অস্বাভাবিক অবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু কিছু পরেই দোতালায় সবার ছোটাছুটি, হৈ চৈ। কেউ কেউ অক্সিজেন অক্সিজেন বলে চিৎকার করছে। “সবাই ছোটাছুটি করে দোতালায় গেলাম। বেশ কিছু পর ডাক্তার এলেন, অনেক চেষ্টা করলেন, কিন্তু উনাকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতে দেখলাম।” এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আনিসুলকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, “দেখা গেছে কয়েকজন মিলে মারতে মারতে আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে ঢোকায়। সেখানে তাকে মেঝেতে উপুড় করে শুইয়ে ফেলা হয় এবং তিন-চারজন পিঠের উপর হাঁটু দিয়ে চেপে বসে। কয়েকজন তার হাত ওড়না দিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে।

“কয়েক জন আসামি কনুই দিয়ে তার ঘাড়ের পেছনে ও মাথায় আঘাত করে। একজন মাথার উপরে চেপে বসে এবং সকলে মিলে পিঠ, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আনিসুল করিম নিস্তেজ হয়ে পড়েন।”

হাসপাতালকর্মী শারমিন বলেন, মারধরের সময় হাসপাতালের অন্যতম মালিক আরিফ মাহমুদ জয় থাকায় কেউ বাধা বা নিষেধ করার সাহস পায়নি।

নাজিমের ভাই ওযাসিউদ্দিন মন্ডল বলেন, “হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে আসার পর আমার ভাই প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে চায়নি। পরে কৌশলে তার কাছ থেকে জানতে পেরেছি, সেখানে নানা ছুতোয় মারধর করা হত। ঠিকমতো খাবার দিত না।” “আল্লাহ বাঁচিয়েছে আমার ভাইকে,” বলেন ওয়াসিউদ্দিন। বিডিনিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়