গিয়াস উদ্দিন : [২] ঝন্টু দাশ (৩৪) গত ৮ বছর ধরে বাড়ির পাশে মাত্র দুটি বিদেশি গরু নিয়ে খামার শুরু করেন। দুধ বিক্রি করে চলছে সংসার। খামার থেকে আসা লাভ দিয়ে ক্রয় করেছেন প্রায় ছয়টির মতো দুগ্ধ গাভী। সবকিছুই মিলে তার ভালো কাটছিল। গত কয়েকদিন আগেও তার খামাওে দশটি গরু ছিল। কিন্তু সর্বনাশা ক্ষুরারোগে তার খামারের ছয়টি গরু মারা যায়। পুঁজি হারিয়ে বাকরুদ্ধ সুজন দাশ চোখে অন্ধকার দেখছে।
[৩] শুধু ঝন্টু দাশ নয় পটিয়ার প্রায় ১৭ খামারির কপাল পুড়েছে গরুর ক্ষুরারোগে। পটিয়া ডেইরি ফার্ম এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল জানান, পটিয়ায় শতাধিক ডেইরি ফার্মে ক্ষুরারোগের প্রদূর্ভাবে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক গরু। মারা গেছে ১১টি দুগ্ধ গাভী। তবে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকারের দাবি এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মাত্র দু’টি গ্রামে কয়েকটি গরু মারা যাওয়ার খবর শোনাগেছে।
[৪] চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় নিবন্ধনকৃত খামারীর সংখ্যা ৬৩টি ও অনিবন্ধীত খামারীর সংখ্যা ১৮১টি। তৎমধ্যে মহিরা পেরপেরায় ২০টিরও অধিক খামারির গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এখানে ৩টি খামারে ৬টি গরু মারা যায়, যার বর্তমান মূল্য ২০ লাখ টাকার অধিক।
[৫] খামারীরা জানায় , পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এর ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকার গত ২ মাস আগে এসে উক্ত খামারের গুরুর ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক দিয়ে আসেন। প্রতিষেধক দেওয়ার ২ মাসের মধ্যেই খামারীদের গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দেয় এবং বেশ কিছু গরু মারাও যায়, যার ক্ষতির পরিমাণ ৩টি খামারীতে ৬টি গরু প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
[৬] উপজেলার মহিরা পেরপেরার খামারী ছোটন দাশ জানান, আমি ৫ থেকে ৬ বছর ধরে গরু খামার করে আসছি। পটিয়া প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে যে ভেক্সিন দিয়েছে তাতে আমার গরুর ক্ষুরা রোগ না কমে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এবং দুটি গরু মধ্যে একটি অন্তঃসত্বা ও অপরটি বাছুর মারা যায়, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪ লাখ টাকা।
[৭] উপজেলার একই এলাকার অপর খামারী ঝন্টু দাশ বলেন, আমরা পটিয়া ডেইরি এসোসিয়েশন এর মাধ্যমে পটিয়া প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে যে ভেক্সিন দেই সাধারণত ভেক্সিন এর মেয়াদ থাকে ৩ মাস কিন্তু সরকারি ভেক্সিন দেওয়ার দুই মাসের মধ্য ক্ষুরারোগে গরু মারা যায়। বিগত ২/৩ বছর আগে আমরা বাইরের ভেক্সিন দিতাম তাতে কোনো ক্ষতি হতোনা। আমার দুটি গরু মারা গেছে যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ লাখ টাকা।
[৮]
[১] পটিয়ায় ক্ষুরারোগে মারা যাচ্ছে খামারিদের গরু, কাজে আসছেনা সরকারি টিকাও
গিয়াস উদ্দিন : [২] ঝন্টু দাশ (৩৪) গত ৮ বছর ধরে বাড়ির পাশে মাত্র দুটি বিদেশি গরু নিয়ে খামার শুরু করেন। দুধ বিক্রি করে চলছে সংসার। খামার থেকে আসা লাভ দিয়ে ক্রয় করেছেন প্রায় ছয়টির মতো দুগ্ধ গাভী। সবকিছুই মিলে তার ভালো কাটছিল। গত কয়েকদিন আগেও তার খামাওে দশটি গরু ছিল। কিন্তু সর্বনাশা ক্ষুরারোগে তার খামারের ছয়টি গরু মারা যায়। পুঁজি হারিয়ে বাকরুদ্ধ সুজন দাশ চোখে অন্ধকার দেখছে।
[৩] শুধু ঝন্টু দাশ নয় পটিয়ার প্রায় ১৭ খামারির কপাল পুড়েছে গরুর ক্ষুরারোগে। পটিয়া ডেইরি ফার্ম এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল জানান, পটিয়ায় শতাধিক ডেইরি ফার্মে ক্ষুরারোগের প্রদূর্ভাবে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক গরু। মারা গেছে ১১টি দুগ্ধ গাভী। তবে স্থানীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকারের দাবি এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। মাত্র দু’টি গ্রামে কয়েকটি গরু মারা যাওয়ার খবর শোনাগেছে।
[৪] চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় নিবন্ধনকৃত খামারীর সংখ্যা ৬৩টি ও অনিবন্ধীত খামারীর সংখ্যা ১৮১টি। তৎমধ্যে মহিরা পেরপেরায় ২০টিরও অধিক খামারির গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এখানে ৩টি খামারে ৬টি গরু মারা যায়, যার বর্তমান মূল্য ২০ লাখ টাকার অধিক।
[৫] খামারীরা জানায় , পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এর ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকার গত ২ মাস আগে এসে উক্ত খামারের গুরুর ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক দিয়ে আসেন। প্রতিষেধক দেওয়ার ২ মাসের মধ্যেই খামারীদের গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দেয় এবং বেশ কিছু গরু মারাও যায়, যার ক্ষতির পরিমাণ ৩টি খামারীতে ৬টি গরু প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।
[৬] উপজেলার মহিরা পেরপেরার খামারী ছোটন দাশ জানান, আমি ৫ থেকে ৬ বছর ধরে গরু খামার করে আসছি। পটিয়া প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে যে ভেক্সিন দিয়েছে তাতে আমার গরুর ক্ষুরা রোগ না কমে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এবং দুটি গরু মধ্যে একটি অন্তঃসত্বা ও অপরটি বাছুর মারা যায়, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪ লাখ টাকা।
[৭] উপজেলার একই এলাকার অপর খামারী ঝন্টু দাশ বলেন, আমরা পটিয়া ডেইরি এসোসিয়েসন এর মধ্যমে পটিয়া প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে যে ভেক্সিন দিয়। সাধারণত ভেক্সিন এর মেয়াদ থাকে ৩ মাস কিন্তু সরকারি ভেক্সিন দেওয়ার দুই মাসের মধ্য গরুর ক্ষুরা রোগ এসে গরু মারা যায়। বিগত ২/৩ বছর আগে আমরা বাইরের ভেক্সিন দিতাম তাতে কোন ক্ষতি হতোনা। আমার দুটি গরু মারা গেছে যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ লাখ টাকা।
[৮] ডেইরি এসোসিয়েসনের মধ্যমে পটিয়া প্রাণি সম্পদ দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এসে দেখে যান কিন্তু গরুগুলোকে ট্রিটমেন্টও দেননি। ওনারা বলেন, আপনাদের মতো করে ট্রিটমেন্ট দেন।
[৯] গত কিছুদিন আগে লগডাউনে আমরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এরপর এখন গরুর ক্ষুরারোগে আমরা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। গরুর খাদ্যের দাম যেভাবে লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে তাতে ডেইরি ফার্ম টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত আবেদন জরুরি ভিত্তিতে আমাদের মতো ডেইরি ফার্মগুলোকে টিকিয়ে রাখতে পদক্ষেপ নিন।
[১০] এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর এর ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকার বলেন, মাস দু’এক আগে অর্থাৎ জুলাই মাসে আমাদের ভেক্সিনেশন প্রোগ্রাম করা হয়েছিল সেখান থেকে আমাদের এফএমডি ভেক্সিন আমাদের খামারীদেরকে সরকারি মূল্যে পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রয়োগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে অধীকাংশ জায়গাতে আমরা কোনো রকমের কোনো এফএমডি আউটব্রিগেটের খবর পাইনি। বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি জায়গা থেকে যখন আমরা খবর পেয়েছি তখন সাথে সাথে অফিস থেকে একজন উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে পাঠাই প্রাথমিক ইনভেস্টিগেশনের জন্য।
[১১] তিনি আরো জানান, কয়েকটি জায়গায় এ রকম ঘটনা ঘটেছে। উনার কাছ থেকে যখন এ রকম ঘটনা ঘটেছে জানতে পারি তখন সেম্পল সংগ্রহ করার জন্য আমি নিজে গিয়েছি। আমি ঐখানে গিয়ে ৫টি ডেইরী ফার্ম থেকে সেম্পল সংগ্রহ করি। পাঁচটা ডেইরী ফার্মের মধ্যে মাত্র একটি ডেইরী ফার্মে আমাদের এখানের যে ভেক্সিনটা আছে সেটা মাসদু’এক আগে ব্যবহার হয়েছিলো।
[১২] আর বাকী ৪টা ডেইরি ফার্মে ভেক্সিন ব্যবহার করা হয়নি। ৪টা ফার্মের মধ্যে একটা ফার্মে ব্যবহার করা হয়েছিলো ইন্ডিয়ার রাক্সা ভেক্সিন। আর বাকী ৩টা ডেইরি ফার্মে ব্যবহার করা হয়েছিলো আরিয়া ভেক্সিন। কিন্তু ঐ ভেক্সিনগুলো তারা অনেক দিন আগে ব্যবহার করেছিলো। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উনার ফার্মে আমি ব্যক্তিগতভাবে গিয়েছিলাম।
[১৩] জিজ্ঞাস করেছি তিনি বলেছেন ৮মাস আগে আমরা ভেক্সিন ব্যবহার করেছি, আমরা কয়েকদিন আগে তার ফার্মে ভেক্সিন ব্যবহার করেছি, চিকিৎসা চলতেছে। ৫টার মধ্যে মাত্র ১টিতে আমাদের ভেক্সিন ব্যবহার করেছি। দু’একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। মহিরা পেরপেরাতে একটা ফার্মের কিছু গরু মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছে কিন্তু খামারি সরাসরি আমাদের অফিসে আসেন নি। কিন্তু আমরা খবর নিয়েছি।
[১৪] এ ব্যাপারে পটিয়া ডেইরি এসোসিয়েসন এর সেক্রেটারি মোহাম্মদ রাসেল জানান, আমাদের খামারে আমরা যে গরুটিকে বিদেশি ভেক্সিন দেওয়া হতো শুধু সে গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়তো। কিন্তু এ সরকারি ভেক্সিনগুলো দেওয়ার পরে খামারিতে অন্য যে গরুগুলো আছে সব গরুতে ক্ষুরারোগ চলে আসে। সরকারি ভেক্সিনগুলোতে আমরা কোনো রকম আস্থা রাখতে পারছিনা। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :