সুজন কৈরী : ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলাকারী ট্রেনগুলো লক্ষ্য করে দুষ্কৃতিকারীদের পাথর নিক্ষেপের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। প্রতিদিনই পাথর নিক্ষেপে যাত্রীদের পাশাপাশি রেল কর্মচারীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। গত এক মাসে ৫০টির বেশি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে এ রুটে। তবে হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে না পারায় প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে রেল যোগাযোগ।
প্রায় প্রতিদিন পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে ট্রেনের জানালা। আর আহত হচ্ছেন যাত্রীরা ও ট্রেনের স্টাফরা। করোনা সংক্রমণ কাটিয়ে রেল চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে এই পাথর নিক্ষেপের হার আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা ব্যবস্থাপক (পূর্বাঞ্চল) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, এটা এতোই বেড়ে গেছে যে, আমরা নিজেরাই এখন এসব ঘটনা নিয়ে বিব্রত।
গত এক মাসের তথ্যে দেখা গেছে, অভিজাত ট্রেন হিসাবে পরিচিত সোনার বাংলা এবং সুবর্ণ এক্সপ্রেসে ৫ বার করে দুষ্কৃতিকারীরা পাথর নিক্ষেপ করেছে। এ সময় যাত্রী ছাড়াও দুজন ইঞ্জিন চালক বা লোকো-মাষ্টার এবং একজন গার্ড গুরুতর আহত হন।
ট্রেন চালকরা বলেন, এটা এখন একটা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পাথরের আঘাতে গ্লাস ভেঙ্গে আমাদের শরীরে আঘাত করছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীণতায় ভুগছি। রেলওয়ের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসছে, আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত যাত্রাপথে সবচেয়ে বেশি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে গার্ড এবং লোকো-মাষ্টাররা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) সাদেকুর রহমান বলেন, যাত্রীরা আহত হচ্ছেন, ভয় পাচ্ছেন। আমাদের রেলের কর্মকর্তারাও ভয়ে থাকেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে রেল পুলিশের (জিআরপি) কাছে।
তবে সীমিত জনবল দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বলে জানিয়ে রেলওয়ে পূর্বঞ্চালের পুলিশ সুপার নওরোজ হাসান তালুকদার বলেন, পুরো রেললাইন তো পুলিশ দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা সম্ভব না। যেখানেই এসব ঘটছে সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে স্থানীয়দের বোঝাতে আমরা চেষ্টা করছি।রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ধারণা, শুধু কিশোররাই পাথর নিক্ষেপ করছে না। বাসের যাত্রী কমে যাওয়ায় প্রতিহিংসা বশত: এবং ভেঙে যাওয়া গ্লাস চড়া দামে ঠিক করতে ঠিকাদারদেরও চক্রান্ত হতে পারে। সূত্র: সময় টিভি অনলাইন
আপনার মতামত লিখুন :