ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাটের পাটগ্রামে কোরআন অবমাননার গুজব তুলে শহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভাঙচুরের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় এ নিয়ে মোট ২৪জন গ্রেপ্তার। ডিবিসি নিউজ
বৃহস্পতিবার রাতে পাটগ্রামের বুড়িমারীতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনিয়ে ছয় দফায় তিন মামলায় মোট ২৪জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এদিকে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মসজিদের খাদেমসহ নয় আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার আসামির তিনদিনের রিমান্ড চাইলে, শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে, এ মামলায় পাঁচজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অপরদিকে ৫ আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায়, তাদের যশোর কিশোর সংশোধানাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্ত বুড়িমারী বাজারের একটি মসজিদে নামাজ শেষে পাঠ করার জন্য মসজিদের সানসেটে রাখা কোরআন শরীফ নামাতে গিয়ে অসাবধনাতাবশত কয়েকটি কোরআন ও হাদিসের বই জুয়েলের পায়ে পড়ে যায়। এ সময় তুলে চুম্বনও করেন জুয়েল। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়।
সন্ধ্যায় পুরো বাজারে ও পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা জানালা ভেঙে প্রশাসনের কাছ থেকে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।
অনুমানের ওপর ভর করে কোরআন অবমাননার অভিযোগ এনে এবং বাকি সবাই অন্ধের মতো সে কথা বিশ্বাস ও মনগড়াভাবে নানা কথা রটিয়ে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর তার মৃতদেহ সে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। পরে গোয়েন্দা সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থার তদন্তে জানা যায় সেখানে কোরআন অবমাননার মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
আপনার মতামত লিখুন :