শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৪৩ দুপুর
আপডেট : ০৫ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৪৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মঞ্জুরে খোদা টরিক: আরব দেশগুলোর মুসলমানরা গরিব দেশগুলোর মেয়েদের অত্যাচার-নির্যাতন করে হত্যা করে

মঞ্জুরে খোদা টরিক: [১] প্রতিবছর মধ্যপ্রাচ্য থেকে শতশত লাশ আসে। বিবিসির ভাষ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা গত ৪ বছরে ৪৭৩ জন। শুধু সৌদিআরব থেকেই এসেছে ১৬৫ জনের লাশ। এ হত্যার কারণ আরব দেশগুলোর ধারী মুসলমানরা এই মেয়েদের গৃহকর্মী+যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করে ও অত্যাচার-নির্যাতন করে হত্যা করে। আর আমাদের করিৎকর্মা (?) দূতাবাসের মাধ্যমে বলে পাঠায় তারা আত্মহত্যা করেছে। সব হারিয়ে নির্যাতিত ও অন্তঃসত্তা হয়ে যারা ফিরে আসছে তাদের সংখ্যা অনেক বেশি।
দুদিন আগে সৌদি থেকে নদী নামে একটি মেয়ের লাশ ফিরেছে। বলা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তার পরিবার ও পত্রিকা বলছে, তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। তাকে হত্যা করা হয়েছে। সনদ অনুযায়ী মেয়েটির প্রকৃত বয়স ১৩। সৌদিতে পাঠাতে পরিবার তার বয়স বলেছে ১৭। আর রিক্রুট এজেন্সি বানিয়েছে ২৫। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের আইন অনুযায়ী নারী শ্রমিকের বয়স কমপক্ষে ২৫ হতে হবে। এভাবেই শিশুদের বয়স বাড়িয়ে শ্রমিক/দাস হিসেবে পাচার হয়। কিন্তু কেউ কিছু জানে না।
গরিবরা একটু স্বচ্ছলতা জন্য তাদের শিশুদের দালালদের হাতে তুলে দেয়। আর এজেন্সিগুলো এদের ‘কচি মাল হিসেবে (?)’ হিসেবে অধিক মুনাফার লোভে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করছে। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও অনিয়মের মাধ্যমে কিছু অমানুষ বছরে বছরের পর এই কাজ করে যাচ্ছে। স্ব-ধর্মের ভাইদের দ্বারা স্বদেশি বোনদের এই অপমাণ, নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ আমাদের মোল্লাদের অনুভূতিতে আঘাত আনে না। তাদের অনুভূতিবোধ সদা জাগ্রত হয় শুধু কে কী বললো তাতে!

[২] ঢাকায় হাজার হাজার মুসল্লির মিছিল-সমাবেশ থেকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের কুশপুত্তলিকা দাহন এবং ফরাসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা পুড়িয়ে ফেলায়, আজ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বেশ কিছু সংসদ সদস্য বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ইউরোর গার্মেন্টস রপ্তানি হয় ইউরোপে। যেহেতু বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া পরামর্শ না মেনে এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েতের অনুমতি দিয়েছিলো সে জন্য ইউরোপিয়ান সাংসদ ভারজিনিজোরন এই প্রস্তাব করে।
ফরাসি পণ্য বয়কটের আন্দোলনের জবাবে ফরাসি প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা মারিন লে পেন, বাংলাদেশি আর পাকিস্তানি অভিবাসীদেরকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করার দাবি তুলেছেন। মারিন লে পেন শুধু একজন গুরুত্বপূর্ণ ফরাসী রাজনীতিবিদই নন, তিনি ইয়োরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং জনপ্রিয় ডানপন্থী নেতাও। ইয়োরোপের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শরণার্থী, অভিবাসী আইন ও নীতিনির্ধারণে মারিন লে পেন’র মতামত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের ধর্মান্ধ মৌলবাদী মুসল্লিদের কারণে বিপদে পড়তে পারে ফ্রান্সে কর্মরত প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক। জার্মান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের নিসের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমার মতে, শুধু ফ্রান্স নয়, গোটা ইউরোপেই আমাদের এখন এ ধরনের হিংস্র আচরণ ও তার পেছনের ইসলামী মনোভাবের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়া উচিত। এখন কি তাহলে জার্মানকে বর্জনের ঘোষণা দেবে মোল্লারা?
শুধু ফ্রান্সের পণ্য কেন, ফ্রান্স দেশটাকে বয়কট করলেই তো হয় ষোলকলা পূর্ণ হয়। ফ্রান্সের মুসলমানরা কি তা করবে? তাদের পণ্য বয়কট করায় ফরাসিদের সমস্যা হবে, সে সমস্যা তো সেখানকার ১০ ভাগ মুসলমানেরও হবে তাই না? তারাও চাপের মধ্যে থাকবে নয় কী? ফ্রান্সের মুসলিমরা কি আপনাদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন?

[৩] মোল্লারা যেভাবে ফ্রান্স-ইউরোপকে বর্জন-বয়কটের তর্জন-গর্জন করছেন তারা বুঝতেই পারছেন না এর পরিণতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে আমাদের জন্য। মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী-যৌনদাসী ও শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ দিয়ে কি কেবল দেশ চলবে? যারা ফ্রান্সের ধ্বংস মোনাজাত করছেন, ফ্রান্সকে বয়কট-বহিষ্কার করতে চিৎকার করছেন, দেশের প্রতি তাদের অবদান কি’ অনুভূতির জন্য হুঙ্কার দেওয়া ছাড়া? নিজেরা একজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাক করতে পারবেন না, বাণিজ্য করে একটা ডলার আনতে পারবেন না, তারাই বলছেন সব অচল করার কথা। তাদের নিজেদেরই দেশে কোনো প্রতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। নিজেদের মাদ্রাসা-প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের সাহায্যে, দয়ায়, কোরবানির চামড়ায়, পথেঘাটে চাঁদা চলে, তারাই ফ্রান্স-ইউরোপকে দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ইসলামী বিশ্বের কথা বলছেন? আরব আমিরাতের পরারাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে ফ্রান্সের মতো অবস্থানকে সমর্থন করেছেন, অন্যরা নিরব। যাদের সাহায্যে আপনারা, আপনাদের প্রতিষ্ঠান চালান।
জাপান-ইউরোপ-আমেরিকাতেও ফ্রান্সের সাধারণ পণ্য পাওয়া যায় না, সব আসে চীন-কোরিয়া অন্যান্য দেশ থেকে। জাপান, জার্মান, ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকার যে পণ্য রপ্তানি করে তা সাধারণ মানুষ কেনার ক্ষমতা রাখে না। আর যে সব পণ্য বাংলাদেশে যায় তা না হলে দেশের শিল্প উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। তারা প্রধানত অতি সৌখিন দামি দ্রবাদি, প্লেন-উড়োজাহাজ, রোবটিক, উঁচুমানের উন্নত মেশিনারি ও হাইটেক টেকনোলজি রপ্তানি করে। আর আপনারা তাদের পণ্য বয়কটের হুমকি দিচ্ছেন! একবার ভাবেন সত্যি যদি ফ্রান্স-ইউরোপ বেঁকে বসে তাহলে আমাদের কী কী হারাতে হবে, অসুবিধা হবে!
[১] ইউরোপ থেকে বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা-শিক্ষা-প্রশিক্ষণ বন্ধ হবে। [২] সেখানে অবস্থানরত অভিবাসী প্রত্যাশীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হবে। আর ভবিষ্যতে যারা যেতে চিন্তা করছেন, সে পথ বন্ধ হবে। [৩] সেখানে কর্মরত অভিবাসীদের সমস্যা হবে। রেমিটেন্সের উপর চাপ আসবে। [৪] ইউরোপ বাংলাদেশের গার্মেন্টেসের প্রধান ক্রেতা সেটা বন্ধ হলে, বাংলাদেশ তাদের বৈদেশিক আয় হারাবে আর গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হবে, বিপদে পড়বে। [৫] রোহিঙ্গাসহ ও নানা ইস্যুতে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা বন্ধ হবে। সেই ক্ষতির পরিধি ও বিস্তৃতি বোঝার সামর্থ এই ধর্মান্ধ, উগ্র, কাঠমোল্লাদের নেই। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়