শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:০৮ সকাল
আপডেট : ০৫ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাসান শান্তনু: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেলের অর্থটা কী?

হাসান শান্তনু: ফেসবুকে কথিত ‘রাষ্ট্রধর্ম’ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে কুমিল্লার মুরাদনগরে, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের বাড়িঘরে বর্বরতা চালানোর জঘন্য ঘটনা সংখ্যালঘুদের প্রতি প্রশাসনের একটা অংশের মনোভাবের সমান, বিপরীতমুখি প্রতিক্রিয়া এমন বলার যুক্তি আছে। বিজ্ঞান বলছে, সব কর্মকাণ্ডের সমান, বিপরীতমুখি প্রতিক্রিয়া আছে। রাষ্ট্রধর্মের অনুভূতিতে আঘাত, অবমাননার সস্তা রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণার চর্চা প্রশাসনিক পর্যায়ের কোনো অংশে প্রশ্রয় পেলে, এর যা প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই ঘটছে। গত কয়েক বছরে ফেসবুকে ইসলাম ‘অবমাননার’ গুজব ছড়িয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের ওপর জিহাদি কায়দায় উন্মত্ত মুসলমানদের হামলার প্রত্যেকটা ঘটনার পর প্রশাসন, সরকার থেকে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রধর্মের ‘অনুভূতিতে আঘাত’ দেওয়া হলো কিনা, সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মের অবমাননা কেউ করলেন কিনা, সেসব খতিয়ে, হাতড়িয়ে দেখা হচ্ছে।

এমনকি হামলার শিকার, ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘুরাই ‘ইসলাম’ অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি পর্যায়ে অতি চর্চিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেলের দেশ শব্দগুলোর অর্থটা সংখ্যালঘুদের কাছে কেমন? সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় আরেকটা পদ্ধতি গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে এ দেশে! ঘৃণ্যপন্থার জিহাদি মার্কা এ পদ্ধতির নাম ফেসবুকে রাষ্ট্রধর্মকে ‘অবমাননা’। রামু, রংপুর, নাসিরনগর, ভোলায় মধ্যযুগীয় তাণ্ডব চলে ওই কায়দায়। কোনোটারই বিচার শেষ হয়নি। দুঃখজনক হলেও সত্য, ঘটনাগুলো ঘটেছে আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহাসিকভাবেই প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের সরকারের আমলে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই একাত্তরে ধর্মনিরপক্ষে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিলো। সংখ্যালঘুরা এ দেশে বর্বরতার শিকার হলেও এক সময় তারা মামলা পর্যন্ত করতে পারতেন না।

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই নির্যাতিতরা মামলা করতে পারেন। কাকতালীয় হলেও সত্য, মৌলবাদী, জঙ্গিদের ফেসবুক জিহাদি কার্যক্রমের সঙ্গে যোগ হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ দেশের এক শ্রেণির মওলানা হর-হামেশা সনাতন ধর্মের অনুসারীদের পূজা, দেব-দেবী নিয়ে বিষোদগার করছেন। তাদের প্রশাসন কখনোই শাস্তি দেওয়ার নজির নেই। এমনকি ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ এ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হওয়ার উদাহরণ নেই। অথচ আইনটি প্রণয়নের পর থেকে ফেসবুকে ইসলামকে ‘কটাক্ষ’ করায় অনেক সংখ্যালঘু গ্রেপ্তার, কারাভোগের শিকার হয়েছেন। যেখানের একটা আইনের শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা, সেখানে তাদের রক্ষার কোনো আইন নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার হওয়া সংখ্যালঘুদের ফেসবুকের অভিযুক্ত স্ট্যাটাসে আসলে কী লেখা ছিলো বা থাকে।

সে সম্পর্কে দেশের বেশিরভাগ নাগরিকেরই কোনো ধারণা থাকে না। প্রগতিশীল সমাজ, নিরেট ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকাঙ্কী তরুণ প্রজন্ম প্রায়ই দেখে, লুঙ্গি পরিহিত প্রশাসনের একাংশের কোমরে ‘ধর্মের তাবিজ’ লটকানো আছে। সংখ্যাগুরুদের বাহবা পেতে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে সংখ্যালঘুদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় লুঙ্গির গেরোটা ঢিলে হয়ে নাভির নীচে নেমে গেলে, প্রশাসনের একাংশের কোমরে তাগা বা গুনশিতে লটকানো বিশেষ ধর্ম রক্ষার কবচটা স্পষ্ট দেখা যায়। মুরাদনগর, পার্বতীপুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির’ কথা বলা হচ্ছে। দৃষ্টান্তটা আসলে কেমন হবে? রাষ্ট্রের জন্মের পর ৫০ বছরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী, ঘাতক, জঙ্গিগোষ্ঠীর দ্বারা অসংখ্যবার হত্যা, নির্যাতন, সম্পত্তি দখল, হামলা, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘুরা। কোনো ঘটনারই দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। বিচার করে দৃষ্টান্ত রাখার মতো দৃষ্টান্তটা ৫০ বছর পরও বিদেশি কোনো সভ্য রাষ্ট্রের কাছ থেকেই ধার করতে হবে। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়