রহিদুল খান: [২] যশোরের ঝিকরগাছায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন স্ত্রী পুতুল রাণি। দগ্ধ হয়েছেন স্বামী প্রদীপও। পুলিশ তাদের দু’জনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে দগ্ধ পুতুল রানীকে ঢাকায় নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।
[৩] মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাস পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
[৪] এদিকে প্রতিবেশিরা স্বামী প্রদীপের বিরুদ্ধে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তোলায় পুলিশ তাকে আটক দেখিয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
[৫] প্রতিবেশিরা জানিয়েছে, রাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিলো। একপর্যায়ে তাদের চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এসময় প্রতিবেশিরা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ঝগড়ার কারণে প্রদীপ তার স্ত্রীকে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে অভিযোগ প্রতিবেশিদের।
[৬] যশোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহম্মেদ তারেক শামস চৌধুরী জানান, রাত ৩টার দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। এছাড়া আহত প্রদীপের দুটি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
[৭] আহত প্রদীপ জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে পুতুলের সাথে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে পুতুলের ঘরের বাইরে যেতে চাইলে তিনি বাধা দেন এবং দরজা আটকে শুয়ে পড়েন। পুতুল ক্ষিপ্ত হয়ে পাশের ঘরে গিয়ে নিজের শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তৎক্ষনাত তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দু’হাত পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশিরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করে।
[৮] প্রদীপ আরো জানান, একবছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তিনি পুতুলকে বিয়ে করেছিলেন। প্রতিবেশিদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
[৯] ঝিকরগাছা থানার অফিসার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শুধু ছেলের বক্তব্য শুনেছি। সে দাবি করেছে তার স্ত্রী নিজে গায়ে আগুন দিয়েছে। মেয়ের বক্তব্য পেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। আপাতাত প্রদীপকে আটক দেখিয়ে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রদীপ সনাতন ধর্ম গ্রহণের আগে মো. আলামিন হিসেবে পরিচিত ছিল।
[১০] গৃহবধূ পুতুলের কাকা সঞ্জয়কুমার জানান, ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রথমে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে এবং এখান থেকে তাকে খুলনা রেফার করা হয়। সেখান থেকে ঢাকা রেফার করা হলে যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জের কাছে পুতুল মারা যান।
[১১] সঞ্জয় দাবি করেন, মৃত্যুর আগে পুতুল তাকে বিস্তারিত বলে গেছেন। পুতুল জানিয়েছেন, রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে প্রদীপ তাকে বলেন, ‘তুই আমাকে কত ভালোবাসিস তা গায়ে আগুন দিয়ে দেখা।’ এই পর্যায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুতুল আগুন ধরিয়ে দেন। সেই আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হয়। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :