এএইচ রাফি : [২] ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও অপহরণ করে নিয়ে গর্ভপাতের ঘটনায় কপাল পুড়লো এক গৃহবধুর। এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে মামলা হলে বিজ্ঞ বিচারক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে। ঘটনার নায়ক কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ইকরাম মামলা তুলে নিতে বাদিনীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
[৩] খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল রাত ১১টায় উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের লতুয়ামুড়া গ্রামের ডিসু মিয়ার পুত্র মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ইকরাম হোসেন (২২) একই গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী এক সন্তানের জননীকে কৌশলে দরজা খোলে ঘরে ঢুকে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে এই গৃহবধুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানাতে শাসিয়ে যায় ইকরাম। ইতোমধ্যে গৃহবধু অন্তসত্বা হয়ে পড়ে। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধু একই গ্রামের ইকরামের অভিভাবক মোখলেছ ও আমির হোসেন গংদের বিষয়টি জানালে তারা কোনো ব্যবস্থা না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে গৃহবধুকে কিছু বুঝতে না দিয়ে শাহেনা বেগম (২২) ও হোসনে আরা বেগম (৪৫) এর মাধ্যমে কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্গিস বেগমের (৪৫) বাসায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে তারা একযোগে আখাউড়া নিয়ে তাদের দলীয় লোকের বাসায় নিয়ে শাহেনা ও হোসনে আরা জোরপূর্বক গৃহবধূর যৌনাঙ্গে ট্যাবলেট ঢুকিয়ে গর্ভপাত ঘটান। এতে গৃহবধুর প্রচুর রক্তপাত হয়। পরে ওই গৃহবধুকে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের গৃহবধুর বাপের বাড়িতে ফেলে যায়। পরে মা ওই গৃহবধুকে তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে এলে গৃহবধু এ সমস্ত ঘটনা জানায়। ঘটনা শুনার পর থেকে গৃহবধুর প্রবাসী স্বামী তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। নিরুপায় হয়ে গৃহবধু ন্যায় বিচারের আশায় ধর্ষক ইকরামসহ ৭ জনকে আসামি করে গত ২২ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
[৪] এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, ইকরামসহ এরা ৬ ভাই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
[৫] গৃহবধুর শ্বশুর হানিফ মিয়া (৬৮) জানান, এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের মান সম্মান সবই গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমুলক বিচার চাই।
[৬] ভুক্তভোগী গৃহবধু সাংবাদিকদের বলেন, আমার সবই শেষ হয়ে গেছে। এখন আমার একমাত্র সন্তান ও আমার ভবিষ্যত অন্ধকার। আমি ইকরামসহ দোষীদের বিচার চাই। যেন আমার মতো আর কারো কপাল এভাবে না পুড়ে।
আপনার মতামত লিখুন :