শিরোনাম
◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫২ দুপুর
আপডেট : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিগগিরই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল উদ্বোধন

শাহীন চৌধুরী: সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎকেন্দ্রের (এনপিপি) প্রথম ইউনিটের মূল ইক্যুপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং একটি স্টিম জেনারেটর ইতিমধ্যেই মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। এই বিশেষ ইক্যুপমেন্ট রাশিয়ান ফেডারেশনের জাহাজ থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় বিশেষ বার্জে স্থানান্তর করে নদীপথে পদ্মাপাড়ে রূপপুর নৌ-বন্দরে নিয়ে আসা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নভেম্বরে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণারয় সূত্র জানিয়েছে।

সূত্রমতে, সমুদ্রপথে রাশিয়ান ফেডারেশনের ভলগা নদী থেকে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত সোমবার রূপপুর এনপিপির প্রথম ইউনিটের মূল ইক্যুপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং একটি স্টিম জেনারেটর বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্র বন্দরের বহির্নোঙ্গর করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এ চালান আগামী ৫ নভেম্বর মোংলা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে নদীপথে চাঁদপুর হয়ে ২১ নভেম্বর পদ্মাপাড়ে রূপপুর এনপিপি প্রকল্প এলাকায় নবনির্মিত রূপপুর নৌ-বন্দরে এসে পৌঁছাবে। রুশ নকশা অনুযায়ী নির্মিত হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। প্রকল্পের দু’টি ইউনিটেই ‘থ্রি প্লাস’ প্রজন্মের সর্বাধুনিক ‘ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর’ স্থাপিত হবে। রিয়্যাক্টরগুলোর কার্যকাল ৬০ বছর যা প্রয়োজনে আরও ২০ বছর বৃদ্ধি করা যাবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান গত ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে রাশিয়ার রস্তভের ভলগদন্সকে ‘এ.ই.এম টেকনলজি’র কারখানা পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাষ্প জেনারেটরের ভিতরের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ স্থাপন এবং জেনারেটর ভেসেলের বিভিন্ন অংশের ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়া অবলোকন করেন এবং প্রেসার ভেসেলের প্রস্তুত কাজের মূল্যায়ন করেন। এসময় ইন্সপেকশন প্রক্রিয়ার অপটিমাইজেশন এবং নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুযায়ী যন্ত্রপাতির নির্মাণ সম্পন্নকরণ সর্ম্পকে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশদ আলোচনা হয়।

এদিকে করোনাকালেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী একাধিকবার সরেজমিন রূপপুরে গিয়ে প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি পরিদর্শণ করে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তাবায়নে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন। আর্থিক বিবেচনায় রূপপুর এনপিপি দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাশিয়া ৯০ শতাংশ দেবে ঋণ হিসেবে, যা প্রকল্পটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পরবর্তী ২৮ বছরে পরিশোধ করা যাবে। প্রকল্প ব্যয়ের অবশিষ্ট ১০ শতাংশ অর্থ যোগান দেবে বাংলাদেশ।

রূপপুর এনপিপির দুটি ইউনিট থেকে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। কেন্দ্রটির সব যন্ত্রপাতি তৈরি ও সরবরাহ করবে রাশিয়া। রূপপুর এনপিপি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভেসেল জেটিতে নামানোর জন্য ৩০৮ টন ধারণ ক্ষমতার দুটি ক্রেন বানানো হয়েছে। এই ক্রেন দুটি অ্যাসেম্বেল করার জন্য আরও ৬শ টন ধারণ ক্ষমতার একটি ক্রেন আনা হচ্ছে। ভেসেল স্থাপনের জন্য চুল্লির কাজও এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

সূত্রমতে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির (ক্লিন এনার্জি) মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে, যা থেকে দীর্ঘমেয়াদে পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ। পরিবেশবান্ধব এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে ‘দ্যা রোড টু এ কার্বন ফ্রি ফিউচার’ বা ‘কার্বন মুক্ত আগামীর পথে’ আন্দোলনের বড় অংশীদার হবে বাংলাদেশ। দেশে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকায় পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান আশা প্রকাশ করে বলেন, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়েই উৎপাদন শুরু হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর এনপিপির নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটর চালান বাংলাদেশে সফলভাবে পৌঁছানো এক যুগান্তকারী ঘটনা। এটি রূপপুর এনপিপির অগ্রগতিতে আরেকটি মাইল ফলক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়