শিরোনাম
◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:৪৫ সকাল
আপডেট : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] হস্তান্তর না হওয়ায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল থেকে ১০ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার

সাবেত আহমেদ: [২] গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত যা এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানটি উদ্ধোধনের চার বছর পেরিয়ে গেলেও মূল ভবনসহ মোট ২৩টি ভবন হস্তান্তর নিয়ে স্থানীয় গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে চলছে গড়িমসি। দুই বিভাগের এ গড়িমসি গত সাড়ে ৪ বছরে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রফেসর ডাঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ অবৈধভাবে কোয়ার্টারে থেকে বিদ্যুৎ বিল বাদে রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা।

[৩] মূল ভবনটিতে সাড়ে ৪ বছর আগে চিকিৎসা সেবা চালু হলেও দুই প্রতিষ্ঠানের ঠেলাঠেলির কারণে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারিদের ২০টি কোয়ার্টারের বৈধ আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কর্মরতরা। অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আবাসিক কোয়ার্টারগুলো। এতে একদিকে বিনষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। অপরদিকে, সরকার প্রতিবছর মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে চিকিৎসা সেবায়ও।

[৪] তবে হাসপাতালটির পরিচালকের কোয়ার্টারে নিজেসহ বেশ কয়েকটি কোয়ার্টারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে থাকছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেকে। ভবনগুলি হস্তান্তর না হওয়ায় পরিচালক বাড়িভাড়া তো কর্তন করছেনই না, পরিশোধ করছেন না বিদ্যুৎ ও পানির বিলের টাকাও।

[৫] হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠানটি উদ্ধোধন করেন। তারপর থেকে হাসপাতালের মূল ভবনে চিকিৎসা সেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালু হলেও গণপূর্ত বিভাগ এখনও মূল ভবনসহ ২৩টি ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়নি।

[৬] চক্ষু হাসপাতালটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে অবস্থিত। ১৫ একর জায়গার উপর ১’শ ৪৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। হাসপাতালটি ২০১০ সালের জুলাই মাসে কার্যাদেশ পায় ও ১৪ সালের ৩০ জুন কাজ সমাপ্ত হয়। ২৩টি ভবনের কাজ সমাপ্ত হওয়ার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও ভবনগুলি বুঝিয়ে দেয়নি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

[৭] চক্ষু হাসপাতালটিতে ২৩টিভবনের মধ্যে একাডেমিক ভবন, ২ হাজার কেভির সাবস্টেশন ও পাম্প ছাড়া বাকি ২০টি ভবনই আবাসিক কোয়ার্টার। সেগুলিতে পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক কোয়ার্টারে ৩ পরিবার থাকার ব্যবস্থা, ডক্টরস কোয়ার্টার দু’টিতে ৩২ জন, সিনিয়র কনসালটেন্টদের বাস ভবনে ১৬ জন, জুনিয়র কনসালটেন্টদের বাসভবন ২টিতে ৩২ জন, সিনিয়র ডক্টরদের ডরমেটরিতে ১৫ জন, জুনিয়র ডক্টরদের ডরমেটরিতে ২০ জন, ডক্টর ডরমেটরি (স্বল্পমেয়াদি) ১৫ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্সদের বাসভবন ৫টিতে ৮০ জন, সিনিয়র নার্সদের ডরমেটরি ১টি ২০জন, নার্স কাউন্সিলর ডরমেটরি ১টি ২০জন, এসেনসিয়াল স্টাফ হোস্টেলে ২০ জন, ৪র্থ শ্রেণির বাসভবনে ১৬ জন, স্টুডেন্ট হোস্টেল (পুরুষ) ১ টিতে ৩০ জন, স্টুডেন্ট হোস্টেল (মহিলা) ১টিতে ৩০ জন থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

[৮] কোয়ার্টারগুলোতে মোট ৩৪৯ জন থাকার ব্যবস্থা থাকলেও গণপূর্ত বিভাগ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টাল বাহানায় সরকার প্রতি বছর রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

[৯] প্রসংগত, এ প্রকল্প চলাকালিন সময়ে ২০১৫ সালে কাজের অনিয়মের অভিযোগে গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ৩ জন এবং ২ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে ওএসডি করা হয়।

[১০] শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রফেসর ডাঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তৎকালীন সময়ে যিনি প্রকল্প পরিচালক ছিলেন তিনি হাসপাতালটির ভবনগুলি গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে বুঝে নেননি। নির্মাণগত কিছু ত্রুটির কারণে আমিও ভবনগুলি বুঝে নিতে পারিনি। তাছাড়া বুঝে নেয়ার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য একাধিকবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। তিনি নিজে অবৈধভাবে কোয়ার্টারে থাকার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, যারা বরাদ্দ ছাড়া কোয়ার্টার বা ডরমেটরিতে উঠেছে তাদেরকে দ্রুত নামিয়ে দেয়া হবে।

[১১] অপরদিকে, গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি গোপালগঞ্জে যোগদানের পর চক্ষু হাসপাতালের ভবনগুলি বুঝে নেয়ার জন্য একাধিকবার চিঠি দিয়েছি কিন্তু চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক কেন বুঝে নিচ্ছেন না তা বুঝতে পারছি না। সম্পাদনা: হ্যাপি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়