রাজু চৌধুরী: [২] গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে প্রাণহানি ও ভূমিধস থেকে রক্ষা করতে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
[৩] চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় গুলোতে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, এনডিসির নির্দেশনায় শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের তত্ত্বাবধানে মহানগরীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণ চট্টগ্রাম মহানগরীর অভ্যন্তরে ঝুঁকি পূর্ণ ১৭ টি পাহাড় এবং বায়েজিদ -ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় করোনাকালীন সময়ে নতুন ঝুঁকি পূর্ণ ১৬ টি পাহাড়ে মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
[৪] বেলা ২ঃ৩০ টা থেকে কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম পাহাড়ের ঝুঁকি পূর্ণ স্থাপনা থেকে লোকজনকে অপসারণ অভিযান পরিচালনা করেন। আকবর শাহ থানাধীন ফিরোজ শাহ এলাকাস্থ ঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। কাট্টলী সার্কেলাধীন ফয়েজ লেক সংলগ্ন ঝিল-১,২ ও ৩ নং এলাকায় ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড়ি বসতি থেকে ১০০ টির মতো পরিবারকে অপসারণ করা হয়েছে। এই সময় স্থানীয় আকবর শাহ থানা পুলিশের টিম অভিযানে উপস্থিত ছিল। অপসারণকৃত পরিবারের মধ্যে ৩০ টি পরিবারকে ফিরোজ শাহ পি-ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে,
[৫] ফয়েজ লেক ও আশেপাশের এলাকার প্রায় ৩৩৬ একরের মতো জায়গা কনকর্ড গ্রুপ কে রেলওয়ে বিনোদন পার্ক হিসেবে ব্যবহারের জন্য লীজ দিয়েছিল। ২০১৭ সালে রেলওয়ে কনকর্ড গ্রুপের সাথে লীজ বাতিল করে। যার বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রীট দায়ের করে কনকর্ড গ্রুপ। ঐ রীটে মহামান্য হাইকোর্ট Status-Quo জারি করে। এরপর ফয়েজ লেক এলাকার চারদিকের পাহাড়ি জমিতে স্থানীয়রা অপদখল করে। লীজ গ্রহীতা কনকর্ড গ্রুপ ও রেলওয়ের নজরদারির ঘাটতিতে ঝিল এলাকায় পাহাড়ি জমি কেটে অবৈধ ও ঝুঁকি পূর্ণ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। উচ্চ আদালতে রীটটি এখনো অনিষ্পন্ন থাকায় রেলওয়ে কিংবা কনকর্ড গ্রুপের পক্ষ থেকে সময়োচিত পদক্ষেপও গ্রহণ করা হচ্ছে না। ঝিল এলাকায় বিভিন্ন স্বনামধন্য এনজিও সংস্থাও কাজ করছে। ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড়েই এনজিও এর অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে নানা প্রকল্প। নির্মাণ করা হয়েছে ঘর, স্কুল, স্যানিটারি টয়লেট। এমনকি পরিদর্শনের সময় স্থানীয়রা জানায় ঝিল এলাকায় জাইকার অর্থায়নে ওয়াসার পক্ষ থেকে সুউচ্চ পাহাড়ি এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
[৬] এদিকে লালখান বাজারস্থ মতিঝর্ণা-বাটালি হিল এলাকার ঝুঁকি পূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে অপসারণ করার কার্যক্রম পরিচালনা করেন বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল হাসান এবং আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুস সামাদ শিকদার। লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। যাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকালীন সময়ের জন্য জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে ত্রাণ হিসেবে শুকনা খাবার এবং খাদ্য সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। চান্দগাও সার্কেলাধীন পাহাড়ি এলাকা রউফাবাদ, আমিন জুট মিলস এলাকা, ট্যাংকির পাহাড়, বন গবেষণা ইনিস্টিউট সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোকজনকে অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনীক।