সুজন কৈরী ও মাহাবুব আলম : পদ্মা নদী জুরে মা ইলিশ রক্ষায় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে নৌ পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত নৌ পুলিশ কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করে। নৌ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে নৌ পুলিশের ব্যানার সম্বলিত জাহাজ মাওয়া ফেরীঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে শরীয়তপুরের কলিকালের চর ও জাজিরার সিদার চরে সাড়াশি অভিযান চালায়। অভিযানে সহায়তার জন্য বিমান বাহিনীর গ্রæপ ক্যাপ্টেন মান্নাফীর নেতৃত্বে একটি হেলিকপ্টার অংশ নেয়। ৭ ঘণ্টার এ অভিযানে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৯৪টি নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জাল বহনকারী ট্রলার ও ২০ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৬৭ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জ এবং শরীয়তপুর অংশের সিডার চর, কলিকালের চর ও বাবুর চরসহ বিভিন্ন চরে ও গড়ে ওঠা মৌসুমি ইলিশের আড়ৎ গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এবং ছয়জন জেলেকে আটক করা হয়। মৎস্য ও প্রণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব, জেলা মৎস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জব্দ ট্রলারগুলো ডুবিয়ে দেয়া হয় এবং পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে জব্দকৃত কারেন্ট জালগুলো।
নৌ পুলিশ জানায়, বরাবরই অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালাচ্ছে নৌ পুলিশ। চলতি বছর আরও নতুন উদ্যোগ ও উদ্যমে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালানো হচ্ছে। নৌ পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলামের সার্বিক নির্দেশনা ও তত্ত¡াবধানে এসব অভিযান পারিচালিত হচ্ছে। এবারই প্রথম এয়ারফোর্সের সমন্বয়ে মা ইলিশ সংরক্ষণে কাজ করেছে নৌ পুলিশ। এর আগে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হতো।
নৌ পুলিশ জানায়, গত ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, বহন, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদের উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নৌ পুলিশের এই বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
নৌ পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম বলেন, জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দৈনিক মজুরির বিনিময়ে কিছু মুনাফালোভী দাদন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সিন্ডিকেট জেলেদের অবৈধ কারেন্ট জাল ও ট্রলার দিয়ে নদীতে মা ইলিশ আহরনের কাজে নিয়োজিত করছে। তাছাড়া জেলেরা অনেকেই পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে এসে এসব চরে অবস্থান নিয়েছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও জেলেদের বিরুদ্ধে নৌ পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরন করছে। তাছাড়া জেলেরা যাতে স্থানান্তরিত হতে না পারে, সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
হেলিকপ্টারে বিমানবাহিনীর সহায়তা নিয়ে চালানো অভিযানের বিষয়ে মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, অতিরিক্ত ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান, নৌ পুলিশের এসপি খন্দকার ফরিদুল ইসলাম, এসপি (অ্যাডমিন) শফিকুল ইসলামসহ চারজন এসপি, মৎস্য বিভাগের উপসচিব আলমগীর হোসেন, দুইজন অতিরিক্ত এসপি ও দুইজন সহকারী এসপিসহ নৌ পুলিশের ৮০ জন সদস্য পদ্মায় এ অভিযান চালান। এছাড়া জাতীয় সম্পদ রক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে নৌ পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিমান বাহিনী এ অভিযানে অংশ নেয়।
আপনার মতামত লিখুন :