তরিকুল ইসলাম : [২] সেটট ডিপার্টমেন্টের অনুমতি না থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া এফ ক্যাটাগরির বাংলাদেশি নতুন শিক্ষার্থীরা সহসাই যেতে পরছেন না।
[৩] কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দূতাবাসের অর্ধেকের বেশি কর্মকর্তারা রয়েছেন ছুটিতে।
[৪] কোভিড পরিস্থিতির জন্য পুরনো শিক্ষার্থী ও অন্যান্যদের ক্ষেত্রেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিচ্ছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস।
[৫] এফ ক্যাটাগরী ভিসায় যারা প্রথম বার যেতে চাচ্ছেন তাদের ইন পার্সন ইন্টারভিউ নেয়াটা একটি দীর্ঘ্য প্রক্রিয়া হওয়ায় স্বল্প জনবলে এটি এক্ষুণি শুরু করা যাচ্ছে না।
[৬] ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় জনবল এবং ভিসা অফিস একাধিক থাকায় সেখানে পুরো কার্যক্রম চলছে জানিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস সূত্র বলছে, এ কারণেই সেখানকার শিক্ষার্থীরা যেতে পারছেন।
[৭] জানুয়ারিতে কার্যক্রম যদিও শুরু হয় তবে সবাই যে যেতে পরবেন বিষয়টি তেমনও নয়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দিনে শতাধিকের বেশি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গেলেও সেটি করোনা ও জনবল সংকটের জন্য ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি সম্ভব হবেনা।
[৮] এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, করোনা পরিস্থিতিরি জন্য দূতাবাসে দু’জন কাজ করছেন। ৬০ ভাগই জয়েন করেনি, যার ফলে সিল মারার লোক নেই। পরবর্তী স্প্রিং সেমিষ্টার থেকে হয়তো নেবে।
[৯] বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হেস্টেল বন্ধ এবং বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভার্চ্যুয়াল ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা গেলে থাকবে কোথায় এমন প্রশ্ন রেখে ড. মোমেন বলেন, তখন আরেক সমস্যা তৈরি হবে। তার দেশে ব্যবস্থা নেই, জোর করে যাবেন?
[১০] কোভিডের কারণে মিশনের কার্যক্রমে সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকায় মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগান বলেছিলেন, কাজ পুরোদমে শুরু করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাতে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে পারে।
[১১] এদিকে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের এফ ক্যাটাগরির নতুন ভিসা কার্যক্রম স্থগিত থাকায় ভর্তি ও ফান্ড বাতিলের শঙ্কায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
[১২] যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্প্রিং ২০২১ (জানুয়ারী) সেশনে ভর্তি বাতিল হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছেন প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী।
[১৩] স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অফ কন্সুলার এফেয়ার্সের প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ২,৫১০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স, পিএইচডি এবং পোস্টডক) প্রোগ্রামে এফ ক্যাটাগরি শিক্ষার্থী ভিসা পেয়েছিলো।
[১৪] মহামারির কারণে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ১৯ মার্চ নতুন এফ ক্যাটাগরি শিক্ষার্থী ভিসা কার্যক্রম স্থগিত করলে এখনো চালু না করায় এ নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
[১৫] ফল ২০২০ (আগস্ট) সেশনে ৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারেনি। ইতোমধ্যে কিছু শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল হয়েছে। বাকিরা তাদের ভর্তি স্প্রিং সেশনে পেছাতে সক্ষম হয়েছে এবং খুবই অল্প সংখ্যক নিজ খরচে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছেন।
[১৬] ওকলাহোমা স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঈশান মৈত্র বলেন, অনুপস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জানুয়ারি সেশনে দেশটিতে যদি যেতে না পারি তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের জন্য অপেক্ষা না করে যে সকল দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা যেতে পারবেন তাদেরকে নিয়ে নেবে।
[১৭] এরফলে বাংলাদেশি একাডেমিকদের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভবিষ্যতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে অনুৎসাহিত বোধ করবে।
[১৮] এছাড়াও, নতুন এফ ক্যাটাগরি স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং ভারতে ১৭ আগস্ট, পাকিস্তানে ২৮ সেপ্টেম্বর এবং শ্রীলঙ্কায় ৮ অক্টোবর হতে শুরু হয়েছে। এসব দেশের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে তাদের যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা নিশ্চিত করেছে এবং সম্ভবত আমাদের জায়গাগুলোই নিয়ে নেবে।
[১৯] ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের ট্রাভেল এডভাইজারী অনুযায়ী করোনা প্রাদুর্ভাবকালীন ভ্রমণের ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী ভারত লেভেল-৪-এ রয়েছে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র দেশটি থেকে শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করেছে।
[২০] বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান লেভেল-৩-এ রয়েছে। ভ্রমণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা এই তালিকা থেকে পাকিস্তান শিক্ষার্থীদের পাঠাতে পরলেও ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
[২১] শিক্ষার্থীরা বলছেন, এডুকেশন ইউএসএ, এডুকেশন ইউএসএ বাংলাদেশ, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কন্সুলার জেনারেল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি তুলে ধরতে ইতোমধ্যে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও নতুন এফ ক্যাটাগরী ভিসা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব পাননি। সম্পাদনা : রায়হান রাজীব
আপনার মতামত লিখুন :