আনিসুল হক, ভিয়েনা : [২ ] জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল-এর ৫৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘মায়াবী মুখের এক দেবশিশু’ শীর্ষক সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ১৮ অক্টোবর, রোববার বিকেল ৬ টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান। সঞ্চালনায় তাকে সহযোগিতা করেন সুইডেন আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার হেদায়েতউল ইসলাম শেলী।
[৩] অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাবেক চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জননেত্রী ডা. দীপু মণি, এমপি, শহীদ সন্তান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।
[৪] এই ভার্চুয়াল সভায় ইউরোপের সব দেশের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ বক্তব্য রাখেন, তারা হলেন, এমএ কাশেম, মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজী, বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু, শহীদুল হক, খোকন শরীফ, এস আর আই রবিন, খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, মোস্তফা মজুমদার বাচ্চু, শাহাদাত হোসেন তপন, জহিরুল ইসলাম জসিম, বেলাল হোসেন, ডা. ফরহাদ আলী খান, মোস্তফা জামান, মাইনুল ইসলাম, রিজভী আলম, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান ভূইয়া, আব্বাস আলী চৌধুরী, শ্যামল খান, বাবুল হাওলাদার, মাহবুবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম কবির, ইকবাল আহমেদ লিটন, মোস্তাফিজুর রহমান, হুমায়ুন কবির, দালিলউদ্দিন দুলু ও বাচ্চু বেপারী প্রমুখ।
[৫] অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘আজকে রাসেলের জন্মদিন। আমি এই দেবশিশুকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করি। কারণ এই দেবশিশু আমার কাছে একটি ভিন্ন মাত্রার শিশু, যার পরিচয় আমি নানা ভাবে পেয়েছি। আমার ওকে সামনা সামনি দেখার সুযোগ হয়নি কিন্তু তার ছবি গুলো দেখে তার মধ্য দিয়ে তাকে আবিস্কার করাই ছিলো আমার কাছে একটি বড় দিক। আমি একটি ছবি দেখেছি ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম দিকের সেই জাতীয় পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লালের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র। এই জাতীয় পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুটিই আমার কাছে স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে গিয়েছিলো। আরেকটা ছবিতে ১৬ ডিসেম্বরের পরে ধানমণ্ডির ১৮ নম্বর রোড়ের বাড়িতে মিত্রবাহিনী ঢুকলে মুক্তিবাহিনী সেখানে গিয়ে সেই বাড়ির দরজা খুলে দেয়। তখন রাসেলের একটি ছবি আছে যে মাথায় হেলমেট দিয়ে আরেকটি ছোট শিশু তার বন্ধু এসএলআর হাতে নিয়ে ছবি তুলেছে। মনে হচ্ছে তারা মুক্তিযোদ্ধা। আমি এভাবে রাসেলকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করি।’
[৬] শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি বলেন, ‘রাসেল ছোট বেলায় অধিকাংশ সময়ই তার বাবাকে কাছে পায়নি। যখন বাবাকে কাছে পেয়েছে তখন সারাক্ষণ বাবার কাছে কাছে থাকতে চেয়েছে। রাসেলের ছবি এবং ভিডিও গুলো দেখলে দেখা যায়, বয়সে ছোট হলেও তার ব্যক্তিত্ব ছিলো অসাধারণ। ছোট রাসেলকে সবসময়ই সব কিছুতে ভালো দিকগুলো বেশি আকর্ষণ করতো। রাসেল ছিলো কৌতুহলী প্রকৃতির। যখনই তার বাবার কথা মনে পড়তো দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতো, কেউ দেখে ফেললে বলতো চোখে ময়লা পরেছে। নিজের দুঃখ কষ্টকে সবসময়ই আড়াল করে রাখতো।'
[৭] অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে আমাদের কি দিতে পারতো আমরা তার বড় বোনকে দেখলেই বুঝতে পারি। কারণ তার বোনের হাত দিয়ে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর পরে সর্বোচ্চটাই পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকলেই আজ বেঁচে থাকলে তারা সকলে মিলে সুন্দর একটি সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে পারতেন।আমরা আশা করবো শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর বুকে আর কোন শিশুকে শেখ রাসেলের পরিণতি বরণ করতে না হয়।'
[৮] সভাপতির বক্তব্যে এম. নজরুল ইসলাম বলেন, 'জাগতিক কোন বোধ ছুঁয়ে যাওয়ার আগেই রাসেলকে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হলো। তবে ঘাতকদের মনেও কি ভয় জাগিয়েছিল এই শিশুটি? বেঁচে থাকলে একদিন পরিবারের রাজনৈতিক উত্তারিধকার বহন করবে সে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ঘাতকদের স্বরূপ উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে, এই ভয় থেকেই কি তাকে সরিয়ে দেয়া হলো পৃথিবী থেকে?' অনুষ্ঠানটির কারিগরি সহযোগিতায় ছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সি.আর.আই.)। উল্লেখ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল ছাড়াও ওয়েবিনারটি দৈনিক সমকাল, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ইত্তেফাক, ভোরের কাগজ, , bdnews24.com, barta24.com, sarabangla.net,jagonews24.com,bd-journal.com, dhakatimes24.com, সময় টিভি ও বিজয় টিভির ফেসবুক পাতায় সরাসরি প্রচারিত হয়েছে। সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ মামুন