রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: [২] রোববার(১৮ অক্টোবর) সন্ধায় পৌর শহরের বন্দর বাজারে ঘটেছে। মারপিটের শিকার কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বর্তমানে উপজেলা স¦াস্থ্য কমেপ্লক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাদেকুলের বাড়ী পৌর শহরের মহিলা ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন এলাকায়। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতেই ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ্য করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
[৩] আহত সাদেকুল সাংবাদিকদের জানান, পৌর শহরের বন্দর বাজারে ব্যক্তিগত কাজে একটি দোকানের ভিতরে বসে ছিলাম। হঠাৎ করেই লেমন এসে আমাকে আমার শার্টের কলার ধরে টেনে হেচঁড়ে বের করে। স্থানীয়রা আমাকে বাচাঁতে এগিয়ে এলে তাদের হুমকি ধামকি দিয়ে লেমন বলে, এই সাদেকুল আমার মামলার স্বাক্ষী তাকে স্বাক্ষী হওয়ার স্বাদ আজ আমি মিটাবো। সাদেকুল জানান, সে-আমাকে এলোপাথারি পেটাতে শুরু করে। আমি যেন কাউকে ফোন না দিতে পারি এ জন্য আমার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে আমার অফিস স্টাফ ও পরিবারের লোকজন এসে আমাকে উদ্বার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তাকে উদ্বারের সময় লেমনের হাতে কৃষি অফিসের নয়ন নামে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মি আহত হয়েছে। সেও বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
[৪] সাদেকুল আরো জানান এর আগে আমার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে মারপিট করার চলমান মামলার দ্বিতীয় আসামী লেমন। সে মামলায় স্বাক্ষী হিসাবে রয়েছি আমি। স্বাক্ষী হওয়ার কারণেই সে আমাকে মারপিট করেছে বলে সে ঘটনাস্থলে বার বার চিৎকার করে বলছিল ।
[৫] কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই সড়কে সাইড নেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায়কে মারপিট করে। পৌর শহরের ভান্ডারা গ্রামের মৃত আম্বর হাজ্বীর ছেলে ফারুক হোসেন(৩৫) ও একই এলাকারা আবুল কালামের ছেলে লেমন হোসেন(৩২)। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। সেই মামলার স্বাক্ষী ছিলেন মারপিটের শিকার হওয়া সাদেকুল ইসলাম। তবে আসামি দুজন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
[৬] স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহতদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লেগেছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপতালে ভর্তি করে নিয়েছি।
[৭] আহত সাদেকুলের ভাই উপজেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনাটির সঠিক বিচার আমরা চাই। এর আগেও আমার ভাইয়ের এক স্যারকে এরা মেরেছে। সেই মামলায় আমার ভাই স্বাক্ষী হিসাবে থাকায়। তাকেও এভাবে মারপিট করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি আসামীদের দ্রুত আটকের অনুরোধ জানিয়েছেন।
[৮] তবে অভিযুক্ত লেমনের সাথে কোনভাবেই যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
[৯] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ঘটনাটি নিশ্চয় দুঃখজনক। আমরা এই উপজেলার খাদ্য শস্য ব্যাপক হারে উৎপাদনের জন্য দিনরাত কাজ করছি। অথচ সেই উপজেলার কতিপয় মানুষের হাতেই এভাবে একের পর এক কর্মকর্তা যদি মারপিটের শিকার হয়। তাহলে তো চাকুরী করায় দুস্কর। তিনি অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন।
[১০] ওসি (তদন্ত) আব্দুল লতিফ সোমবার(১৯ অক্টোবর) মুঠোফোনে জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের আটকের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
[১১] উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, আমার পরিষদের কর্মকর্তাদের এভাবে মারপিট করা হবে,এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা বার বার এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্বে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যা যা করার প্রয়োজন তা করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আপনার মতামত লিখুন :