শিরোনাম
◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ০৯:০৮ সকাল
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ০৯:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নিষিদ্ধ তবু প্রকাশ্যে বেচাকেনা

ডেস্ক রিপোর্ট : নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যেই। এসব পলিথিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে চলা বিভিন্ন কারখানা থেকে কৌশলে মৌলভীবাজার, চকবাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজার হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে খুচরা দোকানে। প্যাকেজিংশিল্পের জন্য পলিথিনের উৎপাদন বৈধ থাকায় এর আড়ালে কারখানাগুলোতে দেদার উৎপাদন হচ্ছে হ্যান্ডলিং (হাতে ধরার) পলিথিন। শুধু চকবাজার ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন মার্কেটেই অবৈধ এই কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন তিন শতাধিক পাইকারি বিক্রেতা। কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে অথবা বস্তাবন্দি করে পাইকারি দোকানে ঢুকছে এবং বিক্রি হচ্ছে পলিথিন। যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পলিথিন নিষিদ্ধের যে আইন রয়েছে তাতে অনেক কিছুই অস্পষ্ট।কালেরকণ্ঠ

পুরান ঢাকার দেবীদাস ঘাট, চকবাজার ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের আশপাশ, চকবাজার বড় কাটরা, আরমানীটোলা, ইসলামবাগ ও কামরাঙ্গীর চরসহ বিভিন্ন এলাকার কারখানায় দিন-রাত চলে পলিথিন তৈরির কাজ। এসব এলাকায় পলিথিন তৈরির সরঞ্জাম বিক্রির জন্যও রয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং, রোল ম্যানুফ্যাকচারার্স ওনার্স অ্যান্ড ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু মোতালেব বলেন, ‘যারা প্যাকেজিংয়ের দোকানে শপিং ব্যাগ বিক্রি করছে, তাদের বিরুদ্ধে সমিতি ব্যবস্থা নিচ্ছে। জরিমানা করা, নির্দিষ্ট কয়েক দিন দোকান বন্ধ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারখানাগুলোও নজরে রয়েছে। এর ফাঁকেও বিক্রি করে, আমাদের আর কী করার আছে? আসলে এটা নিয়ে সরকার অনেক চেষ্টা করছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আইনের ব্যাখ্যা ঠিক না হবে, ততক্ষণ সমস্যার সমাধান হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘পলিথিন নিষিদ্ধ না বৈধ, এটা নিয়ে অনেক দেনদরবার করেছি। বিএনপির সময়ে করা আইনটিই ঠিক নেই, যার ব্যাখ্যাও ঠিক ছিল না। আসলে পলিথিন ব্যাগ আর পলিথিন প্যাকেজিং দুটি আলাদা জিনিস। আইনটি দুটিতে গুলিয়ে গেছে। সরকার পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু প্যাকেজিং আলাদা। বিদেশ থেকে যে পণ্যগুলো আসছে সেগুলোর র‌্যাপিং হচ্ছে প্যাকেজিং দিয়ে। পাশাপাশি এটার সঙ্গে এক্সট্রাও দেওয়া হচ্ছে। এটা যখন আসছে তখন বৈধ, আবার লোকাল বাজারে যখন প্যাকিং করা হচ্ছে এটা অবৈধ।’

বুধবার পুরান ঢাকার চকবাজার ও মৌলভীবাজারের বেশির ভাগ মার্কেটে প্রকাশ্যে পলিথিন বেচাকেনা হচ্ছে। দুপুর আড়াইটার দিকে শেখ এলাহী বক্স মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, খাকি রঙের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দোকানে দোকানে রাখা হয়েছে নিষিদ্ধ পলিথিন। হলি টিউব ট্রেডার্স নামের দোকানের মালিক বলেন, মার্কেটে এটা নতুন নয়! মাঝেমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবার সব ঠিক হয়ে যায়। মার্কেটে সবাই ব্যবসা করছে, কোনো অপরাধ তো করছে না।

জানা যায়, প্যাকেজিং পলি বলা হলেও বাস্তবে এগুলো হাতে বহন করার মতো করেই তৈরি করা হয়। পিপি, এইচডিপি, এলডিপি প্যাকেজিং পলিথিন পাইকারি বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন আকারের এই পলি পাঁচ পাউন্ডের বান্ডেল হিসেবে বিক্রি হয়, যার পাইকারি দাম রাখা হয় ৪৫০ টাকা। বাজারে চার রকমের হ্যান্ডলিং (তোড়াসহ) পলিথিন রয়েছে, যার রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দাম। এসব পলিথিনের রঙেও রয়েছে ভিন্নতা—কালো, নীল, সাদাসহ কয়েক রঙের।

নাজিম উদ্দিন মার্কেটের মাস্টার পলি প্যাকেজিংয়ে মূল সড়ক থেকে কাগজে মোড়ানো পলিথিন নেওয়া হচ্ছিল। হঠাৎ বৃষ্টিতে কিছু কাগজের প্যাকেট ভিজে যাওয়ায় পলিথিন দেখা যাচ্ছিল। ভ্যানচালক রহমত উল্লাহ বলেন, ‘বেগমবাজার কমিশনার অফিসের পাশে পলিথিনের কারখানা থেইক্কা এগুলান আনতাছি। ওই কারখানা দোকানের মালিক ইব্রাহিম ভাই।’ কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন কেন বানানো হচ্ছে জানতে চাইলে ইব্রাহিম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। একই সময় চকবাজারের মরিয়ম প্লাজার নিচতলায় মেসার্স নিহাদ এন্টারপ্রাইজের দোকানেও পণ্য (পলিথিন) আসছিল। এই দোকানে পলিথিনগুলো কাগজে না মুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করে আনতে দেখা যায়।

জানা যায়, বেশির ভাগ পাইকারি দোকানির কারখানা রয়েছে। অথবা কোনো না কোনো কারখানার মালিকের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। মালিকরা এসব কারখানায় খুব একটা যান না। কর্মচারীরাই পণ্য তৈরি করে পাইকারি দোকানে পৌঁছে দেন। ওই মালিকদের প্যাকেজিং ব্যবসার নামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পলিথিন বিক্রি করাই মূল ব্যবসা।

সমিতির আওতায় দেড় শতাধিক দোকান থাকলেও চকবাজারের পেয়ারা মার্কেট, লুতফর নাহার ম্যানশন, আবুল হোসেন মার্কেট, মৌলভীবাজার মাংসপট্টি মসজিদ গলি, সালাম মার্কেট, মাওলানা মার্কেট, শামসুদ্দিন প্লাজা ও এসরার ম্যানশনে তিন শতাধিক পাইকারি দোকানে প্রকাশ্যে বেচাকেনা চলছে নিষিদ্ধ পলিথিনের। মাহিমা প্যাকেজিং নামের দোকানের এক কর্মচারী বলেন, ‘নিষিদ্ধের বিষয়টা সবার জানা, কিন্তু প্রশাসন আর নেতাদের টাকা দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগে দৈনিক ৮০-৯০ হাজার টাকার পলি বিক্রি হতো। করোনার মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছিল। এখন আগের চাইতে কিছুটা বাড়ছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়