ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে, অহরহ শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এখন পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক সাজা তো নেই, উল্টো বছরের পর বছর ঝুলছে মামলা।
সেই সঙ্গে সমাজে অবক্ষয় বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে ধর্ষণ, বলছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, সারাদেশের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের হিসাবে শিশু ধর্ষণ মামলায় সাজার হার মাত্র ১ শতাংশ।
৭ই অক্টোবর রাজধানীর খিলগাঁওয়ে একই ব্যক্তির ধর্ষণের শিকার হন ৪ শিশু। সেরাতেই তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ধষফরেনসিক রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় শিশুদের শরীরে।
২০১৭ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ৫ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের পর শিশুটির উরুতে সিগারেটের ছ্যাঁকাসহ প্রজনন অঙ্গ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে ধর্ষক। বিচারিক আদালতে আটকে আছে সেই ঘটনার মামলা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ফারজানা রহমান বলেন,'ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন তারা কিন্তু অভিযোগ পর্যন্ত করতে পারেন না। অনেক সময় তার পরিবারই তাকে থামিয়ে দিচ্ছে লজ্জায়। সবাইকে দেখানো হলো যে, আইন আমরা ঠিক করে দিচ্ছি তোমরা ঘরে চলে যাও। সবাই ঠিক আবাম চার/পাঁচ মাস পর বা এক বছর পর সবাই আবার একইভাবে নামবে এটা আসলে যৌক্তিক না।'
নির্যাতিত নারী ও শিশুদের কল্যাণে সরকার ২০০১ সালে চালু করে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার। যেখানে নির্যাতিত নারী ও শিশুদের একই সঙ্গে চিকিৎসা, আইনি সেবা ও মানসিক কাউন্সেলিং করা হয়।
ঢাকাসহ দেশের ৯ টি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের হিসেবে দেখা যায় চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে ৪২ হাজার ৮৪৩ জন নারী ও শিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১৩ হাজার ৮৪২ জন নারী ও শিশু সেবা নিয়েছে। এর বড় অংশই শিশু। এসব ঘটনায় ১১ হাজার ২৮৮ মামলা দায়ের হলেও সাজা হয়েছে মাত্র ১৬০ টি মামলায়। শতকরা হিসাবে যা মাত্র ১.৪২ শতাংশ।
ব্লাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন,'কোন না কোন ক্ষেত্রে এই অপরাধীরা কিন্তু বেইল নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। বড় সমস্যা যেটা সেটা হলো যে ব্যক্তি নিজেই ভিকটিম তার পক্ষে সে যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এটা প্রমাণ করা বড়ই কঠিন।'
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে চলতি বছরের সেপ্টম্বর পর্যন্ত গত ৯ মাসে ১০৭৮ শিশু শারীরিক নির্যাতন ও নানা সহিংসতার শিকার হয়েছে। হত্যার শিকার ৪৪৫ শিশু। শুধু ঢামেক ওসিসিতেই আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়ে এসেছে ৩৪১ জন শিশু।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন,'যৌন হয়রানির মামলাগুলোতে অনেক সময় মানুষ কোর্টে আসতে চান না। কোর্টের বাইরে মিটমাট করিয়ে নেন লোকলজ্জার কারণে। এ কারণে অপরাধীদের কিন্তু অনেক সাহস বেড়ে যায়।'
মামলার দ্রুততা বিবেচনায় ও সাজা নিশ্চিত করতে ওসিসি মামলাগুলো আলাদা কোর্টের মাধ্যমে বিচারের পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। ডিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :