শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২০, ০৪:১৮ সকাল
আপডেট : ১১ অক্টোবর, ২০২০, ০৪:১৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আশরাফুল আলম খোকন: ধর্ষণের সেঞ্চুরি, একটি গুজবের আত্মকাহিনি [পার্ট-২]

আশরাফুল আলম খোকন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণের সেঞ্চুরির কল্পকাহিনি নিয়ে একটি লেখা ফেসবুকে লিখেছিলাম। সেখানে স্পষ্ট করেই বলেছি, ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করতে ১৯৯৮ বা ১৯৯৯ সালে যে নাটক মঞ্চস্থ করেছিলো তখনকার বামপন্থী শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনগুলো, তা ছিলো পরিকল্পিত একটি ঘটনা। আমি আবারও বলছি, ওই ঘটনা ছিলো পরিকল্পিত। আর এই গুজবের নায়ক ছিলো তারাই, যাদের পূর্ব পুরুষরা বলেছিলো, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে দুই কুকুরের লড়াই’। যাদের বিরুদ্ধে এই গুজবের স্রষ্টা হিসেবে আমি অভিযোগ করেছি তারা একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, আমি নাকি মিথ্যা বলেছি। কিন্তু কোথায় কোনটা মিথ্যা বলেছি, তা উল্লেখ করেননি অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, রেহনুমা আহমেদ ও মানস চৌধুরী। যাক সে কথা। ওনারা বলবেনই, কারণ অনেকদিন পরে হলেও তাদের সাজানো নাটক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

তারা এটাও বলেছেন যে, হয়তো আবার ২০ বছর পর লিখবো যে বেগমগঞ্জ ও এমসি কলেজে কিছু ঘটেনি। ওনাদের মেধার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। কারণ ওনারা শিক্ষক কিন্তু ওনাদের মানসিকতার প্রতি ওই শ্রদ্ধাটুকু রাখতে পারি না। তাও বেশি কিছু বললাম না। শুধু এইটুকু বলি, বেগমগঞ্জ, এমসি কলেজে ধর্ষণের শিকার এবং ধর্ষণকারীদের সুনির্দিষ্ট নাম পরিচয় এবং অভিযোগ আছে। জাহাঙ্গীরনগরে মানিকের বিরুদ্ধে কারও অভিযোগ ছিলো। একটা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কথা বলেন তো? আপনারা বেগমগঞ্জ ও এমসি কলেজের উদাহরণ দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী যে নাম পরিচয় দিয়ে ধর্ষণের মামলা করেছে সেটার উদাহরণ দিতে লজ্জা পেলেন কেন? ওই ধর্ষক নুরু গং’রা আপনাদের পালিত মানসপুত্র বলে। আর এই জন্যই মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি।

আপনারা ওই সময়কার পত্রিকার নিউজ দেখার কথা বলেছেন। হ্যাঁ, নিউজ সবই দেখেছি, সবই পড়েছি। সব নিউজই ছিলো আপনাদের বক্তৃতাবাজি আর মিছিল মিটিংয়ের নিউজ। কোনো ধর্ষিতার অভিযোগের নিউজ ছিলো না। কিছু বেনামি অভিযোগ জমা হয়েছিলো, যা আপনাদের গং’রা লিখে জমা দিয়েছিলো। কোনো নাম-ঠিকানা ছিলো না। আমি তখন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা করেছি। তখন অনেক কিছুই দেখেছি। ওই ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এনেছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও অচল করে দেওয়ার জন্য ডাকসু ভবনে তারা মিটিংও করেছে। রাতের বেলা তাদের গোপন মিটিং করতেও দেখেছি। দেশের কোনো পত্রিকার কোনো সাংবাদিককে এই আন্দোলন জমানোর জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো এর সবই নিজ চোখে দেখা। আমরা অধিকাংশ সাংবাদিকরা আগেই জেনে গিয়েছিলাম বলে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন সফল হতে পারেনি। ২ বা ১ টা বাদে মিডিয়ার সমর্থনও পায়নি। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরের মিডিয়ার ব্যক্তিরা শুধু তা সমর্থন করেনি, অনেক ক্ষেত্রে তারা তা তৈরি করেছিলো।

জাহাঙ্গীরনগরের সাংবাদিক সমিতির তৎকালীন সভাপতি (এখন বিসিএস ক্যাডার) এবং তার তৎকালীন প্রেমিকা ( ওই আন্দোলনের নেত্রী, এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)সাংবাদিক সমিতির অফিসে বসে মনের মাধুরী মিশিয়ে ধর্ষণের আন্দোলনের রিপোর্ট লিখতেন। সেই রিপোর্টগুলোই বিভিন্ন পত্রিকায় পাঠানো হতো। তখনকার একজন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানিয়েছেন, তাদের ওই রিপোর্ট পত্রিকায় পাঠাতে বাধ্য করা হতো। নতুবা সাংবাদিক সমিতির সদস্যপদ দেওয়া হবে না বলে ওই সভাপতি হুমকি দিতেন। ওই সময়ে বোটানিক্যল গার্ডেনের একটি ধর্ষণের ঘটনাকে টেনে ছাত্রলীগের ওপর এনে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করা হয়েছিলো। আর ছাত্রলীগের স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক হয়ে ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী মানিক ওই সময়ে একটি জমকালো পার্টি দিয়েছিলো। সে পার্টিকে টাইমিং করে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসব বানিয়েছিলেন আপনারা, ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করতে।

ছাত্র ইউনিয়নে আমার অনেক বড় ভাই, বন্ধু ও ছোট ভাইও আছে। মধুর ক্যান্টিন টিএসসিতে একসাথে আড্ডাও দিতাম। ছাত্রলীগ করলেও তারা যখন একটা চাঁদার রশিদ ধরিয়ে দিতো তাও দিতাম। তা শুধুই সম্পর্ক ও ভালোবাসার কারণে। আমার আগের লেখাটি নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর শাখা ছাত্র ইউনিয়নও একটি বিবৃতি দিয়েছে। অনেক বড় বিবৃতি। এক জায়গায় তারা বলেছে আমি নাকি ওই সময়ের সেই পবিত্র আন্দোলনকে বিতর্কিত করেছি। তাই নাকি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কিন্তু আপনারা যে ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনকে বার বার কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেন, তখন আপনাদের বিবেকে বাধে না। ওই আন্দোলনের নেপথ্যের কাহিনি জনসম্মুখে বলে দেওয়ার জন্য আমার যদি ক্ষমা চাইতে হয়, তাহলে এই অপরাধে আপনাদের মতো আরও যারা ষড়যন্ত্রকারী আছে তাদের কী করা উচিত?

যখন আপনাদের সংগঠনের নেত্রী জলি তালুকদার দলের নেতা দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে বিচার চেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনশন করেছিলো তখন আপনাদের বিবেক কোথায় ছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারজানা কবির বীথি যখন নুরু গংদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে অসহায়ের মতো ঘুরেছে। তখন আপনাদের বিবেক কোথায় বন্ধুক রেখেছিলেন। আপনাদের সংগঠনের নেতা যখন জায়ামাত নেতার মুখে বক্তৃতার সময় মাইক্রোফোনে ধরে রাখে তখনতো মনে হয় আপনারা জামায়াতের এজেন্ট হয়ে ছাত্র ইউনিয়নের মতো প্রগতিশীল সংগঠনে ঢুকেছেন। যাই হোক ওই সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের একজন পরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়র ডিনও হয়েছিলো। যারা সবসময় শিক্ষাকে পন্য করা চলবে না বলে শ্লোগান দিতো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার খরচ কতো তা সবাই জানি। এই লেখায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন টেনে এনেছি তা পরের আরেকটি লেখায় হয়তো লিখবো। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়