সাইদ রিপন : [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেছেন, কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ কৃষি আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে। মানুষের যাতে খাবারে কষ্ট না হয়। যদিও খাবারের কষ্ট থেকে আমরা সবাইকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
[৩] প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষের সাথে যুক্ত হয়ে মোট ৪টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯১৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানান।
[৪] প্রধানমন্ত্রী বলেন, নগদ সহায়তা ও প্রণোদনাসহ সঠিক পদক্ষেপের কারণে সরকার অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমরা ঠিক সময়মতো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কত টাকা আছে কী আছে সেটা চিন্তা করিনি। এটাই চিন্তা করেছি এই দুঃসময়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাটাকে যদি গতিশীল রাখতে হয় তাহলে অবশ্য সেখানে আমাদের পৌঁছাতে হবে। মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে হবে। আর সাধারণ মানুষ যাদের কোনো কাজ না থাকলে জীবনটা চালানোই মুশকিল, তাদেরও নগদ অর্থ সাহায্য করা বা বিভিন্ন সেক্টরে যে আমরা টাকা পাঠিয়েছি সেগুলোও কিন্তু খুব কাজে লেগেছে।
[৫] তিনি বলেন, কৃষিতে আমরা সরাসরি দিলাম, আবার শিল্পসহ অন্য সেক্টরগুলোর জন্য আমরা আলাদাভাবে কিন্তু ভাগে ভাগে যেমন ক্ষুদ্র ও মাঝারির জন্য আলাদা, বৃহৎ শিল্পের জন্য আলাদা এরকম প্রত্যেকটা সেক্টরের জন্য ভাগ ভাগ করে দেওয়ার পরে গার্মেন্টস সেক্টরের জন্যও বিশেষভাবে দিলাম। এই দেওয়ার কারণেই অর্থনীতিটা গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা যে প্রণোদনাটা দিয়েছি, এই প্রণোদনাটা যখনই এরা নিতে শুরু করেছে তখনই কিন্তু তারা আবার ব্যবসায় ফিরে আসতে পেরেছে। এমন কোনো সেক্টর নেই যাদের আমরা সাহায্য দেইনি।
[৬] শেখ হাসিনা বলেন, বিত্তশালী-বড়লোকদের সেভাবে আমরা দেইনি। যারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি এবং সময়মতো আমরা যে টাকাটা দিলাম, নগদ ও প্রণোদনা দিলাম, এটাতেই কিন্তু ব্যবসাটা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যারা লেবার তাদেরও কাজ করবার আগ্রহ ছিল, তারাও কাজ করছে।
[৭] পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি গবেষণা পরিচালনা ও গবেষণা প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়ার দিকে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই থাকে। এগুলো যেন হাটবাজারে পরিণত না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক গবেষণা হতে হবে। এজন্য অর্থ কোনো সমস্যা নয়। প্রয়োজনে আমি নিজেই টাকার ব্যবস্থা করব। তবে এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, গবেষণার বরাদ্দ থাকে, কিন্তু ব্যয় হয় না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বাড়াতে হবে।
[৮] সেসব গবেষণা বেশি বেশি প্রকাশের ব্যবস্থাও নিতে হবে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
[৯] প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিজ-কালভার্ট প্রকল্পগুলো শীতের মধ্যেই শেষ করতে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাগাদা দিয়েছেন। এমনভাবে ব্রিজ-কালভার্ট সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে যেন সেটি শীতের মধ্যেই শেষ করা যায়। প্রকল্পগুলো যেন বর্ষাকাল পর্যন্ত না যায়। এছাড়া বিটাকের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দিতেও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে এর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।