শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ০৬ অক্টোবর, ২০২০, ০৯:৩৭ সকাল
আপডেট : ০৬ অক্টোবর, ২০২০, ০৯:৩৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেশিনম্যান সালামের হাতে প্রশ্নফাঁস, জড়িত চিকিৎসক ও কয়েকটি কোচিং সেন্টার

সুজন কৈরী : সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টালের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীর জি ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি বলছে, চক্রটি ২০১৩ ও ২০১৫ সালের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টালের প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিল। চক্রের মূল মাস্টারমাইন্ড হলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আব্দুস সালাম। ২০১৫ সালে তার নামে একটি হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আসায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় তাকে। চক্রের সঙ্গে পাঁচ-ছয় জন অসাধু চিকিৎসক এবং তিন-চারটি কোচিং সেন্টার জড়িত রয়েছে বলে সালামকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে সিআইডি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ঢাবি কর্তৃপক্ষের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সন্ধান পায় সাইবার পুলিশ সেন্টার। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফঁসের চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় সাইবার পুলিশ। সানোয়ারের তথ্যের সূত্রে চলতি বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে মেডিকেল প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দেয়ার মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন এবং তার সহযোগী জাকির হোসেন দিপু ও পারভেজ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়। এসব টাকা মেডিকেল ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। তদন্তকালে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মূল মাস্টারমাইন্ড স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আব্দুস সালামের নাম জানা যায়। মামলার খবর পেয়ে গা-ঢাকা দেন সালাম। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একটি হত্যা মামলারও আসামি আবদুস সালাম। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি।

বিশেষ পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, আব্দুস সালাম খুব কৌশলে ছাপার কাজ চলার সময় একটি প্রশ্ন সরিয়ে ফেলতেন। পরে তার খালাতো ভাই প্রশ্ন ছড়ানোর আরেক মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন টাকার বিনিময়ে একটি বড় চক্রের মাধ্যমে মেডিকেলে ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দিতেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের জসিম ও সালামসহ অন্য সদস্যদের অবৈধভাবে আয় করা সম্পদের খোঁজ শুরু করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ। ইতোমধ্যে জসিম উদ্দিনের ৩৮টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব অ্যাকাউন্টে ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। এছাড়া জসিমের স্ত্রী জেসমিন আরা শিল্পীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। শেষ হওয়ার পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হবে।

প্রশ্নফাঁসের এই প্রক্রিয়ায় পাঁচ-ছয়জন অসাধু চিকিৎসক এবং তিন-চারটি কোচিং সেন্টার জড়িত থাকার সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়ে সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

গ্রেপ্তার সালামের সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুল আলম বলেন, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা নেই বললেই চলে। তবে তার নেশা হলো জমি কেনা। তিনি কী পরিমাণ জমির মালিক তা জানার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে গত কয়েক বছরে সাইবার পুলিশের টানা অভিযানে আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় এটা অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। তবে মেডিকেল প্রশ্নফাঁসে ভর্তি অনেকেই এখন চিকিৎসক। মামলার তদন্ত শেষে পরে জালিয়াতি করে ভর্তি ও পাস করা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আব্দুস সালামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। এ চক্রে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়