মঈন উদ্দীন: [২] বন্যার পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির প্রবল চাপে রাজশাহী, নওগাঁ এবং নাটোর উপজেলার কয়েকটি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
[৩] রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকাসহ সোনাডাঙ্গা, কাচারী কোয়ালীপাড়া, দ্বীপপুর, বড়বিহানালী ও ঝিকরা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির প্রবল চাপে বাগমারার বিভিন্ন ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। বিভিন্ন সড়ক কোমর পর্যন্ত পানিতে ডুবে যাওয়ায় ওইসব এলাকার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে।
[৪] অপরদিকে বন্যার পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপদ বিভাগ ও এলজিইডি’র একাধিক বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
[৫] নওগাঁর মান্দায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুতগতিতে বারনই ও হীরা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকাসহ সোনাডাঙ্গা, কাচারী কোয়ালীপাড়া, দ্বীপপুর, বড়বিহানালী ও ঝিকরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করে প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এ বন্যায় নিম্নাঞ্চলের কৃষি জমির আবাদ তলিয়ে গেছে। ভেঙে পড়ছে অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। শত শত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
[৬] নাটোরের সিংড়ায় আত্রাই নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধিতে সিংড়া পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে পুকুরে চাষকৃত কোটি কোটি টাকার মাছ, পানিতে তলিয়ে গেছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল। আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১১১ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
[৭] গত বুধবার রাত ২টার দিকে পানির তীব্র স্রোতে পৌর এলাকার শোলাকুড়া মহল্লায় সিংড়া-বলিয়াবাড়ি রাস্তার বাঁধ ভেঙে যায়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শোলাকুড়া, সোহাগবাড়ী, কতুয়াবাড়ী, মহেশচন্দ্রপুরসহ কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে নাগর নদীর হিয়াতপুর নামক স্থানে সিংড়া-তাজপুর সড়ক বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে ওই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
[৮] এদিকে বন্যায় উপজেলার ২ হাজার ৭৭৬ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ১৩’শ পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। পানিবন্দি হয়েছে অন্তত এক লাখ মানুষ। ফলে নিরুপায় হয়ে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে ছুটছেন বন্যাকবলিত এলাকার দুর্গত মানুষরা। ইতোমধ্যে ২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
[৯] সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানু জানান, বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক খোঁজ-খবর নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৮৮০ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। সম্পাদনা: হ্যাপি