ফরিদুন্নাহার লাইলী : বাবা-মা আদর করে ডাকতেন হাসু। কে জানতো এই হাসুই হবেন একদিন তার বাবার যোগ্য উত্তরসূরি? বাবার দেখানো পথে দীপ্ত পায়ে এগিয়ে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এই দেশ এবং মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন তার বাবা বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন সে স্বপ্নের পথে তিনি হেঁটে চলেছেন দূর্বার গতিতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৮১ সাল অবধি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমনই অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিলো যেখানে দমনপীড়ন, শোষণ নির্যাতনে মানুষ ছিলো অসহায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিদেশে থাকায় বেঁচে যাওয়া তার দুইকন্যার দেশে আশা ছিলো অনিরাপদ। তারপর ১৯৮১ সালের ১৭ই মে শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং তার প্রতি লক্ষ লক্ষ মানুষের সেই সম্বর্ধনা আমরা নিশ্চয়ই বিস্মৃত হতে পারি না। পিতার শোকের সান্তনা তিনি সেদিন এই মানুষের মাঝে দেখেছিলেন এবং মনে মনে স্থির করেছিলেন পিতার অসমাপ্ত কাজ তাকেই সমাপ্ত করতে হবে।
জীবন দিয়ে হলেও করতে হবে। এ কথা তিনি বারবার উচ্চারণও করেছেন। তারপর ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত এক দীর্ঘ স্বৈরাচার সামরিক সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছেন শেখ হাসিনা। নিজের দল সংগঠিত করতে হয়েছে, নেতা ও কর্মীদের মধ্যে আদর্শ স্থাপন করতে হয়েছে। আজ তিনি দেশ ও জনদরদী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। পিতার মতোই অসীম সাহসী, দৃঢ়তায় অবিচল, দেশপ্রেম ও মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন একজন আদর্শবাদী নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা মানুষের কাছে আজ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় নেতা। দেশের যে কোনো সংকটে তার নেতৃত্ব দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কাছে তিনিই একমাত্র গ্রহণযোগ্য। সেখানে দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ফুটে উঠেছে তার সরকার পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অভুতপূর্ব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ এখন এক সময়ের শাসক পাকিস্তানের জন্য দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।
আজ বাঙ্গালি শেখ হাসিনাকে ‘শান্তিকন্যা’ হিসেবেই দেখছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এরূপ আপসহীনতা ও আস্থাশীলতার কারণেই বিশ্বের বুকে শান্তিকন্যা শেখ হাসিনা সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তার নেতৃত্ব আজ বিশ্বনেতাদের কৌতুহল এবং আগ্রহের বিষয়েও পরিণত হয়েছে। কেবল তাই নয়, বিশ্বপরিমণ্ডল থেকে সম্মাননাও পাচ্ছেন। বিশ্বের নামি-দামি সংবাদ মিডিয়াগুলোর একাধিক জরিপে ইতোমধ্যে বিশ্বনেতাদের তালিকায় শেখ হাসিনার নাম সামনের সারিতে স্থান করে নিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে শেখ হাসিনা তার সততা, আত্মত্যাগ, দূরদর্শীতা ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন–এটাই হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। আজ শেখ হাসিনার জন্মদিন। আমি বিশ্বাস করি, এ দিনটি অচিরেই সমস্ত বাঙালির কাছে উদযাপনের দিন হবে।
লেখক : কৃষি ও সমবায় সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সাবেক সংসদ সদস্য
আপনার মতামত লিখুন :