সুজন কৈরী : [২] হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে নতুন মাদক অ্যামফিটামিন পাউডার জব্দের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তি হলেন- বাবলু। তিনি মাদক বহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কুরিয়ারকে সুপারিশ করেছিলেন বলে ডিএনসি সূত্র জানিয়েছে।
রোববার বিকেলে বনানীর এইচ ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ডিএনসি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
[৩] ডিএনসি জানায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানি কার্গো ভিলেজে কাস্টমস বাংলাদেশ বিমানের মাস্টার এয়ারওয়ে বিল নম্বর ৯৯৭-৬২৪৪-৯১৩৩ এর বিপরীতে ৩৪০ কার্টন পণ্য এসেসমেন্ট এবং বিধি মোতাবেক দৈবচয়নের ভিত্তিতে কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির উপিস্থিতিতে সিভিল এভিয়েশনের ডুয়েল ভিউ সিকিউরিটি স্ক্যানিং ৩৪০ কার্টন পণ্যের মধ্যে সাতটি কার্টনে তল্লাশি করে জিন্সের প্যান্টের আড়ালে কার্টনের গায়ে ১৪টি বড় প্যাকেট ও ১৪টি ছোট প্যাকেটে মোট ২৮টি কার্বনের লেয়ার দিয়ে প্রস্তুত পাতলা অ্যালুমিনিয়াম প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। সেখানে অভিনব কায়দায় লুকানো মোট ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম সন্দেহজনক দ্রব্য পাওয়া যায়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে নমুনা টেস্ট করে অ্যামফিটামিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ‘ক’ তফশিলভুক্ত মাদক। যে সাতটি কার্টনে অ্যামফিটামিন পাওয়া যায় সেগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত রফতানি দলিলাদি প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফেডেক্স কুরিয়ার সার্ভিস মাস্টারওয়ে বিল নং ৮১৫১৫৬০২৪৬২৬ এর ছয়টি কার্টন এবং মাস্টারওয়ে বিল নং ৮১৪৯২৬৯৫১৯৭০ এর একটি কার্টনসহ মোট সাতটি কার্টনে শিপারের নাম নেপচুন ফ্রেইট লি. বাড়ি ৫০১, রোড ১৪ কেরানীগঞ্জ। এসব পণ্য রফতানিতে কাস্টমসের জন্য ম্যানুয়ালি বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল করেছে রফতানিকারকের পক্ষে মেসার্স ডিনামিক ট্রেডার্স (এআইএন:১০১-৯৬০৭২৮). ফেডেক্সের লোকাল এজেন্ট হলো ইউনাইটেড এক্সপ্রেস, ১৬৭, সার্কুলার রোড, ঢাকা।
[৪] ইয়াবার চেয়ে শক্তিশালী অ্যামফিটামিন মাদক মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস কুরিয়ারে করে বাংলাদেশ থেকে হংকং হয়ে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর কথা ছিল জানিয়েছে ডিএনসি।
[৫] ডিএনসি সূত্র জানায়, আশকোনায় নেপচুন ফ্রেইট লিমিটেডের একটি অফিস রয়েছে এবং ওই অফিসের রুবেল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই সাত কার্টনে তৈরি পোশাক-জিন্সের প্যান্ট অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর জন্য ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লিমিটেডে বুকিং দিয়ে যায়। বনানীর ইউনাইটেড ফ্রেইটের লোডার সুপার ভাইজার বাবুলর সুপারিশে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস কুরিয়ার নামক প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো নেপচুন ফ্রেইট লিমিটেডের ওই সাতটি কার্টন গ্রহণ করে। পরে ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লি. কার্টনগুলো ফেডেক্সে পাঠায়। ফেডেক্স তার হাবে সংরক্ষণ করে এবং কার্গো ভিলেজে পাঠায়।
[৬] সূত্র আরও জানায়, অ্যামফিটামিন মাদক পাচারের চেষ্টার ঘটনায় দুইজন সন্দেহভাজনের মধ্যে বাবলু অন্যতম। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই বাছাই করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।