শাহীন খন্দকার : [২] এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে আসুন সবাই মিলে কাজ করি, জলাতঙ্ক প্রতিরোধ করি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা.শ. ম. গোলাম কায়সাসার বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস, এ উপলক্ষ্যে দেশব্যাপি জনসচেতনতার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করে এক প্রেস বার্তায় সংবাদ মাধ্যমে একথা জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রতি ১০ মিনিটে একজন এবং প্রতিবছর প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায় ।
[৩] জলাতঙ্ক একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি। এরোগে মৃত্যুর হার শতভাগ। রোগটি মূলত কুকুরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। বিড়াল, শিয়াল, বেজী, বানরের কামড় বা আচঁড়ের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪-৫ লক্ষ মানুষ কুকুর, বিড়াল, শিয়ালের কামড় বা আচঁড়ের শিকার হয়ে থাকে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।
[৪] এ ছাড়াও প্রায় ২৫ হাজার গবাদি প্রাণী এ রোগের শিকার হয়ে থাকে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা আজ প্রায় জলাতঙ্ক মুক্ত, সকল কুকুর বাধ্যতামূলকভাবে টিকাপ্রাপ্ত। দক্ষিণ আমেরিকায় ব্যাপকহারে কুকুর টিকাদানের মাধ্যমে জলাতঙ্ক প্রায় নিয়ন্ত্রণে এনেছে। জলাতঙ্ক মূলত এখন আফ্রিকা এবং এশিয়া, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার সমস্যা। বিশ্বের প্রায় ৯০ ভাগ জলাতঙ্কে মৃত্যু এখন দুটি মহাদেশে। শুধু মাত্র ভারতেই প্রায় ১৫-২০ হাজার লোক প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগের স্বীকার। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানও একটা বড় অংশ বহন করে।
[৫] বাংলাদেশেও ২০১০ সালের আগে প্রতিবছর প্রায় ২০০০ মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেত এবং গবাদি প্রাণির মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান অজানা হলেও একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবাদি প্রাণী এ রোগে মারা যায়।বাংলাদেশের ৬৭টি জেলায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর আধুনিক ব্যবস্থাপনা এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচেছ।
[৬] তিনি বলেন, ঢাকা জেলার মহাখালীতে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র “সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল” এ প্রতিদিন প্রায় পাচঁশত থেকে ছয়শত কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়।
[৭] ইতিমধ্যে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণের সাথে সমঝোতার স্মারক স¦াক্ষর করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এনজিও-এর সম্মিলিত উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূলের লক্ষ্যে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :