খুঁজেস্তা নূর-ই নাহারিন: প্রেমের ক্ষেত্রে যুগে যুগে পুরুষ নারীকেই দোষারোপ করে এসেছে। যাযাবরের লেখনি থেকে ধার করা বাক্য নিয়ে কখনো প্রেমিকাকে উপহাস করেছে, কখনোবা প্রেম নিবেদন করেছে। আর আমি ভাবি কী দুর্দান্ত কথার মালা। পুরো অংশটাই নারীর বিপক্ষে কিন্তু তবুও শেয়ার না করে পারলাম না। নারীর কী দোষ , নারীদের সবসময় সাবধানী না হয়ে আছে? কারণ নারী মানেই দায়িত্ব, নারী মানেই কলঙ্কিত হওয়ার ভয়, নারী মানেই পুরো পরিবারের মর্যাদা রক্ষা, নারী মানেই আরও অনেক কিছু। চাইলেই নারী সবসময় সবকিছু করতে পারে না। বাঁধা থাকে পরিবার পরিজন, সমাজ-সংসারের কাছে, রীতি-নীতির কাছে। বাঁধা থাকে মায়া আর মমতার কাছে। বাঁধা থাকে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির কাছে। গণ্ডী পার হওয়া কি এতো সহজ। ‘দৃষ্টিপাতে’ যাযাবর পুরুষের দৃষ্টিতে নারীকে দোষী সাব্যস্ত করতে চেয়েছেন, অন্তরের জ্বালা থেকে হয়তোবা খানিকটা খাটোও করতে চেয়েছেন। কিন্তু নারীর অসহায়ত্ব, নারীর অপারগতা, তাঁর অক্ষমতা, আর তাঁর চারিপাশের উঁচু দেওয়াল সম্বন্ধে বুঝতে চাননি। নারী-পুরুষ দুজনের প্রেম দু’রকম হবে সেটাইতো স্বাভাবিক।
যাযাবরের লেখা ‘দৃষ্টিপাতের’ এই লাইনগুলো এখন পর্যন্তও ভীষণ জনপ্রিয়। ‘নারীর কাছে প্রেম একটা সাধারণ ঘটনা মাত্র। আবিষ্কার নয়, যেমন পুরুষের কাছে। মেয়েরা স্বভাবত সাবধানী, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর বাঁধে। ছেলেরা স্বভাবতই বেপরোয়া, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর ভাঙে। প্রেম মেয়েদের কাছে একটা প্রয়োজন, সেটা আটপৌরে শাড়ির মতোই নিতান্ত সাধারণ। তাতে না আছে উল্লাস, না আছে বিস্ময়, না আছে উচ্ছ্বলতা। ছেলেদের পক্ষে প্রেম জীবনের দুর্লভ বিলাস, গরিবের ঘরে ঘরে বেনারসী শাড়ির মতো ঐশ্বর্যময়, যে পায় সে অনেক দাম দিয়েই পায়। তাই প্রেমে পড়ে একমাত্র পুরুষেরাই করতে পারে দুরূহ ত্যাগ এবং দুঃসাধ্যসাধন। জগতে যুগে যুগে কিং এডওয়ার্ডেরাই করেছে মিসেস সিম্পসনের জন্য রাজ্য বর্জন, প্রিন্সেস এলিজাবেথরা করেনি কোনো জন, স্মিথ বা ম্যাকেঞ্জির জন্য সামান্য ত্যাগ। বিবাহিতা নারীকে ভালোবেসে সর্বদেশে সর্বকালে আজীবন নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছে একাধিক পুরুষ; পরের স্বামীর প্রেমে পড়ে জীবনে কোনোদিন কোনো নারী রয়নি চিরকুমারী’। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :