অহিদ মুকুল : [২] নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের নাজির আলমগীর হোসেন ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে এবং তাকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করায় তার স্ত্রী, তার বোন ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে জেলা দায়রা ও বিশেষ জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন নোয়াখালী দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
[৩] দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা (নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেলা জজ আদালতের নাজির আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নোয়াখালী দুদক দূর্নীতি দমন কমিশনের অনুমতিক্রমে তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে।
[৪] দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নাজির আলমগীর হোসেনের অনেক দূর্নীতির তথ্য। তার পর কর্তপক্ষের অনুমতি নিয়ে নোয়াখালী দুদকের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ বাদী হয়ে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের নাজির আলমগীর হোসেন এবং দূর্নীতিতে তাকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করায় তার স্ত্রী নোয়াখালীর জুডিশিয়াল পেস্কার নাজমুন নাহার, তার বোন আফরোজা আক্তার ও তার বন্ধু বিজন ভৌমিককে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১, তাং-৫-৮-১৯ ইং।
[৫] পরবর্তীতে কতৃপক্ষের নির্দেশে উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম মামলার তদন্তভার গ্রহন করেন। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও তদন্তের পর ২৪-৯-২০২০ জেলা দায়রা জজ ও বিশেষ জজ আদালতে মামলার চার আসামী প্রত্যকের বিরুদ্ধে ৪২০, ৪৬৮, ৪৬৭, ৪৭১, ১০৯ ধারা ও তৎ সহ দূর্নীতি প্রতিরোধ ৫(২) ধারা, দূর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎ সহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় চার্জশিট দখল করেছেন।
[৬] তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে উল্লেখ করেন, নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের নাজির (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আলমগীর ১-১-১৯৯৭ সালে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতে ষ্টানোগ্রাফার হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে রেকর্ড কিপার ও পরবর্তীতে নাজির হন। ২০০৬ সালে বিয়ে করে তার স্ত্রীকে ২০০৮ সালে জুডিশিয়াল পেষ্কারের চাকুরি দেন। দীর্ঘ তদন্তে বেরিয়ে আসে তারা স্বামী স্ত্রী চাকুরি জীবনে যা আয় করেন তার ছেয়ে শতগুন বেশি অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে যায়।
[৭] তদন্তে বেরিয়ে আসে নাজির আলমগীর হোসেন তার স্ত্রী নাজমুন নাহার, বোন আফরোজা আক্তার ও বন্ধু বিজন ভৌমিকের সহযোগিতায় ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার, ৬২৫ টাকার অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখে এবং কতৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নাজির আলমগীর ঐশী ট্রেডার্স নামে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। একই সাথে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ও হুন্ডি করে ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা মানিলন্ডারিং করেন।
[৮] তদন্তের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমতিক্রমে আসামী জেলা নাজির আলমগীর হোসেন, জুডিশিয়াল পেষ্কার নাজমুন নাহার, আলমগীরের বোন আফরোজা আক্তার, তার বন্ধু বিজন ভোমিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছেন। দুদকের পিপি এডভোকেট আবুল কাশেম জানিয়েছেন আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেছেন বলে। তিনি জানান, সকল আসামী উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করা পর্যন্ত জামিনে রয়েছেন। ইতিমধ্যে দুদক আদালতের মাধ্যমে নাজির আলমগীরের বাড়ি ক্রোক করে বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে এবং আসামীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছেন। সম্পাদনা : জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :