সারোয়ার জাহান: করোনা আবহে বারবার পিছিয়ে যাওয়া। দেশের মাটিতে আয়োজন করতে না পারার পর বিদেশে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। করোনা রুখতে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ। সব সামলে ফের একবার আইপিএল ফিরল আইপিএলেই। প্রথম দিনেই মুখোমুখি হল গতবারের দুই ফাইনালিস্ট চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। একদিকে দীর্ঘদিন পর অধিনায়কত্ব করা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আরেকদিকে, বর্তমানে ভারতীয় দলে বিরাটের ডেপুটি রোহিত শর্মা। শেয়ানে শেয়ানে টক্করে শেষপর্যন্ত বাজিমাত করলেন ধোনিই। রায়াডু-দু’প্লেসিসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সাহায্যে চার বল বাকি থাকতেই ১৬৩ রানের টার্গেটে পৌঁছে যায় চেন্নাই। রায়াডু করেন ৭১ রান। দু’প্লেসির সংগ্রহ অপরাজিত ৫৮ রান।
সব কিছু যেখানে শেষ হয়েছিল, ঠিক সেখান থেকেই যেন শুরু হল সবকিছু। ম্যাচ শুরু হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে শুরু করে একটি পোস্ট। ১৫ আগস্ট সন্ধে ৭টা ২৯ মিনিটে অবসর করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আর ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধে ৭টায় ফের টস করতে নামলেন ‘থালাইভা’। চেন্নাইয়ের জার্সি গায়ে প্রায় দেড় বছর পর বাইশ গজে ফিরলেন মাহি। আর আবেগে ভাসল গোটা দেশ। গতবারের হাইভোল্টেজ ফাইনালে ধোনির চেন্নাইকে মাত্র ১ রানে হারিয়ে চতুর্থবার ট্রফি ঘরে তুলেছিলেন রোহিত শর্মা। এবার তাই বদলা নিতে মরিয়া ধোনি টস জিতে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিলেন রোহিত আর কুইন্ট ডি’কক। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৩ রানের মাথায় চাওলার বল প্যাভিলিয়নে ফেরেন হিটম্যান। এরপর দ্রুত ফিরে যান সূর্যকুমার যাদবও। এরপর মুম্বইয়ের হাল ধরেন সৌরভ তিওয়ারি এবং ডি’কক। দু’জনে মিলে তৃতীয় উইকেটে ৪৪ রান যোগ করেন। এরপরই বাউন্ডারি লাইনে দুর্দান্ত দুটি ক্যাচ ধরে সৌরভ তিওয়ারি (৪২) ও হার্দিক পাণ্ডিয়াকে (১৪) প্যাভিলিয়নে ফেরান ডুপ্লেসি। বড় রান পাননি কায়রন পোলার্ডও। ১৮ রান করেই আউট হন ক্যারিবিয়ান তারকা। অন্যদিকে, ডি’ককের সংগ্রহ ৩৩ রান। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রানে থামে মুম্বইয়ের ইনিংস। চেন্নাইয়ের হয়ে এনগিডি তিনটি এবং চাহার ও জাদেজা দুটি করে উইকেট নেন।
আমিরশাহীর এই বোলিং সহায়ক উইকেটে ১৬৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খেতে হয় চেন্নাই শিবিরকে। ওয়াটসনকে (৪) ফেরান প্যাটিনসন। অন্যদিকে, বিজয়কে (১) ফেরান বোল্ট। কিন্তু এরপরই দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে আসে চেন্নাই। সৌজন্যে ভারতীয় দলে ব্রাত্য রায়াডু এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু’প্লেসিস। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই দুরন্ত অর্ধশতরান করে রায়াডু বুঝিয়ে দিলেন কেন তিনি এখনও ভারতীয় দলে শামিল হতে পারেন। শেষপর্যন্ত ব্যক্তিগত ৭১ রানের মাথায় রায়াডুকে আউট করেন দীপক চাহার। এরপর কিছুটা চাপে পড়ে যায় চেন্নাই শিবির। কারণ সদ্য ক্রিজে আসা রবীন্দ্র জাদেজা ১০ রান করেই আউট হন। তবে শেষদিকে স্যাম কারেনের পাঁচ বলে ঝোড়ো ১৮ এবং দু’প্লেসির বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং চেন্নাইকে জয় এনে দেয়। তিনি অপরাজিত থাকেন ৫৮ রানে। শেষদিকে ব্যাটিং করতে নামলেও কোনও রান না করে অপরাজিত থাকেন ধোনি। তাও চার বল বাকি থাকতে।
তবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ম্যাচ হলেও টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। দু’দলের সমর্থকরাও টিভি বা মোবাইলেই প্রিয় দলের খেলা চাক্ষুশ করলেন। তবে হাড্ডাহাড্ডি এই ম্যাচে তাঁরা যে নিরাশ হননি, তা প্রায় বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে, এদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ (তিওয়ারি ৪২, এনগিডি ৩৮/৩)
চেন্নাই সুপার কিংস: ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৩ (রায়াডু ৭১, দু’প্লেসি ৫৮*, বোল্ট ২৩/১ )
চেন্নাই পাঁচ উইকেটে জয়ী।
সূত্র- সংবাদ প্রতিদিন
আপনার মতামত লিখুন :