শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৮:৫১ সকাল
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৮:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: এশিয়ার রাজনীতির নয়া মেরুকরণ ও আমাদের জন্য সুযোগ

কাকন রেজা: বিশ্ব রাজনীতির অভূতপূর্ব মেরুকরণ হচ্ছে। আর এই করণের উৎসমূল মূলত এশিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার রোলটাও এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কদিন আগেও যারা চীন ভারতের যুদ্ধ নিয়ে অস্থির ছিলেন তারা এখন হতভম্ব। হঠাৎ করেই চীন ভারত সমঝোতা। অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ভারতের সুরে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে কথা বলবে না তারা। মিয়ানমারে নতুন করে যুদ্ধাপরাধের কথা উঠছে। সব মিলিয়ে হিসেবটা ক্রমে জটিল রূপ নিচ্ছে। পুরনো সূত্রে সমীকরণটা আর মিলতে চাইছে না। এই না মেলার ধাক্কায় এশিয়ার রাজনীতিতে বড় একটা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। যে পরিবর্তন হবে অনেকটাই দক্ষিণ এশিয়াকে ঘিরে।

যুক্তরাষ্ট্রের কথায় আসি। এ অঞ্চলে ভারতকে তার প্রয়োজন ছিলো চীনকে ব্যস্ত রাখতে। বিপরীতে ভারতকে ব্যস্ত রাখতে চীন পাকিস্তানের উপর ভর করে ছিলো। কিন্তু মিয়ানমার ইস্যুতে চীন এখন ব্যাকফুটে। বিশে^র সামনে মিয়ানমার রীতিমতো ভিলেন এবং তার স্বীকৃত গডফাদার চীন। সুযোগে মিয়ানমারকে চেপে ধরে এখন চীনকে দেখে নেওয়ার রাস্তা ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ভারতকে খুব বেশি দরকার নেই তার। ভারত এক রকম বোঝা হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। ভারতের দাদাগিরির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলো ক্রমেই চীনমুখী হচ্ছে। এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বাড়ছে এবং তা এখন ভারতকে ছাড়িয়ে। সবেধন নীলমনি বাংলাদেশও যায় যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের আধিপত্য না না কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির বন্ধুত্বও হারাচ্ছে দেশটি। ভারতের বন্ধুত্ব এখন উল্টো ‘বরে শাপ’ হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্র্রের কাছে।

সঙ্গতই যুক্তরাষ্ট্রের সুর অনেকটাই উল্টো। সামনের নির্বাচনে যদি ট্রাম্পের ভরাডুবি ঘটে তবে অবস্থা আরো বিগড়ে যেতে পারে। এ অবস্থা বুঝেই ভারত চীনের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল। না হলে ভারতের বর্তমান অজনপ্রিয় সরকার খেলায় জড়িয়ে জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় হতে চাইতো। আর তা পারতোও। তারপরেও ভারতের এই পিছিয়ে যাওয়াটা ছিলো সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলের হিসেব কষে। মিয়ানমারের কারণে যখন চীনও দেখলো তারা কোনঠাসা। তখন বাধ্য হয়েই দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ঢুকে পড়া ঠেকাতে ভারতের সাথে অলিখিত সন্ধির দিকে এগিয়েছে তারা। তবে এই সমীকরণে মাইনকা চিপায় পড়বে পাকিস্তান। বাধ্য হয়েই পাকিস্তানকে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতা করতে হবে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির মোড় অনেকটাই ঘুরে যেতে পারে। আপাত দৃশ্যচিত্র অন্তত তাই বলে।

অনেকে আমাদের দেশের বিদেশনীতি ভারত না চীন এমন ভেবে মরছেন। এই যে দোদুল্যমানতা, এটা আমাদের দেশের নিজস্ব চিন্তার ফসল শুধু নয়। এটা দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাজনীতির দোল। এই দোল স্থির হতে সময় লাগবে। তবে সব অমঙ্গলেই কোনো না কোনো মঙ্গল নিহিত থাকে। তেমনি বড় শক্তগুলোর প্রতিযোগিতা ছোট রাষ্ট্রগুলোকে কিছুটা সুবিধা আদায়ের সুযোগ করে দেয়। যেসব রাষ্ট্রের চালকেরা নৈতিক ভাবে শক্তিমান। অর্থাৎ জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি, তারা এমন সুযোগের সঠিক ব্যবহার করতে পারেন। আর নৈতিক ভাবে দুর্বলদের অবস্থা থাকে তথৈবচ। আমাদের মতন ছোট রাষ্ট্রগুলোর জন্য এই পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি সুযোগ। এটা অস্বীকারের উপায় নেই। দীর্ঘ সময় এমন পরিস্থিতি থাকবে না। সুযোগ গ্রহণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রুতই। সময়ই বলে দেবে আমরা এই সুযোগটা গ্রহণ করতে পেরেছি কিনা।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়