তৌহিদুর রহমান: [২] ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হাওর বেষ্ঠিত চাতলপাড় বাজারে বর্ষা মৌসুমে আসলেই চাঁই, আইডা, গোলচাঁইসহ মাছ ধরার চাঁইয়ে হাট বসে। সপ্তাহে দু‘দিন শনি ও বুধবার চাতলপাড় কলেজ সংলগ্ন মাঠে এ হাট বসে। বর্ষা মৌসুমে থাল-বিল-নদী-নালায় পানির প্রবাহ বাড়ে। সেই সাথে দেশি প্রজাতির মাছের বিচরণ বৃদ্ধি পায়। এসময় বাইলা, চিংড়িসহ দেশি মিঠা পানির মাছ ধরার জন্য গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে বাঁশের তৈরি বিশেষ এক ফাঁদ।
[৩] বাঁশের শলা দিয়ে তৈরি মাছে ধরার এ ফাঁদের নাম চাঁই। গ্রামাঞ্চলে মাছ ধরার সবচেয়ে আদি উপকরণের মধ্যে একটি হচ্ছে বাঁশের চাঁই। স্থানীয়রাসহ এলাকার প্রত্যন্ত এলাকায় বাঁশ, বেত দিয়ে তৈরি করা মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম নিয়ে বিক্রেতারা চাতলপাড় হাটে নিয়ে বিক্রি করছে।
[৪] পেশাদার মাছ শিকারী থেকে শুরু করে সৌখিন শিকারীরা পর্যন্ত কিনে নিচ্ছে মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম। ভরা বর্ষাতে ও কাংখিত বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদী-নালা ও জমিতে প্রয়োজনীয় পানি থাকায় নিপুণ হাতের তৈরি বাঁশ-বেতের মাছ শিকারে এসব চাঁই বিক্রি হচ্ছে।
[৫] বিক্রেতা ওয়াহেদ আলী,আক্কাস আলী ও অমল সরকার জানান, চাই তৈরির বাঁশ ক্রয় করে এ কাজে বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে ছেলে- মেয়েরাও সহযোগিতা করে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এসব তৈরি করে থাকেন তারা। এসব তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৩শ’ টাকা। আর তা বিক্রি হয় ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়।
[৬] বিক্রেতারা আরও জানান, এসব তৈরিতে আগের চেয়ে তৈরির খরচও বেড়েছে। ফলে আগের মতো আর লাভ হয় না।
[৭] উপজেলার চাতলপাড় বাজার ঘুরে ক্রেতা জসিম মিয়া ও নারায়ণ দাসের সাথে কথা হয়, তারা বলেন, আমরা প্রতিবছরই এই সময়ে মাছ মারার জন্য এখান থেকে চাঁই কিনে নিয়ে যায়। এখানকার তৈরী চাঁই স্হানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলাসহ বিভিন্ন স্হানে পাইকাররা এসে নিয়ে যায়।
[৮] বিক্রেতা শামসু মিয়া জানান ,মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম আকার ও গুণগত মানভেদে বিক্রি হয় বিভিন্ন দামে। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে বাঁশ-বেতের তৈরি মাছ শিকারের এসব সামগ্রী বিক্রি হয় সবচে বেশি। এবার পানি বেশী হওয়ায় ভরা বর্ষাতে চাঁই বিক্রি ভাল হচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত চাঁই গুণগত মান অনেক ভালো। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :