বিশ্বজিৎ দত্ত: [২] রাজস্ব কর্মকর্তা ও কার্মচারিরা যাতে নিজ অফিসে থাকেন তার ছবিসহ উপস্থিতি রিপোর্ট প্রদানের জন্য কর অঞ্চলগুলোতে নির্দেশ পাঠিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। প্রতিদিনই এই রিপোর্ট বোর্ডে পাঠাতে হবে। প্রয়োজনে ভিডিও ক্লিপসহ পাঠাতেও বলা হয়েছে।
[৩] রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর কর বর্ষের শেষ জাতীয় পর্যায়ে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। করদাতারা মেলায় গিয়ে তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেন। আবার অনেকে নতুন কর সনাক্ত নাম্বার (টিন) নেন। কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই করদাতারা সেখানে কর রিটার্ন জমাদেন। মেলায় কর প্রদানের জন্য ব্যাংকও রাখা হয়। দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলায় কর মেলা হয়। প্রায় শতাধিক উপজেলাতেও মেলা হয়। এবারে করোনা কারণে কর মেলা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর সদস্য আরিফা শাহানা।
[৪] গত ১০ বছর যাবত দেশে কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নিয়ে করকর্মকর্তাদের মধ্যেও মত পার্থক্য রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, কর মেলার সময় নানা ধরনের আনুষ্ঠানিকতায় জড়িত থাকায় কর আদায়ে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এমনিতেই লোকবল কম থাকায় কর সেবা দিতে কর্মকর্তা কর্মচারিদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয় তার উপর মেলার আনুষ্ঠানিকতায় সময়ের অপচয় হয়।
[৫] কর সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ সময়। এরপরেও অসুধিা থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে কর রিটার্ন জাম দেয়ার সময় বৃদ্ধি করা যাবে। বর্তমানে প্রায় ২২ লাখ করদাতা কর রিটার্ন জমা দেন। গত বছর মেলাতে ৬ লাখ ৫৫ হাজার করদাতা কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এবারে প্রত্যেক টিনধারীকেই কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। তাদের নুন্যতম কর দিতে হবে ৫ হাজার টাকা। এটি কোন করদাতার ৩ লাখ টাকা নীট আয় না থাকলেও দিতে হবে। তারমতে এবারে টিনধারীদের বাধ্যতামূলক রিটার্ন দাখিল করায় ব্যাক্তি শ্রেণির আয়কর বাড়বে।
[৬] বোর্ড সূত্রে জানা যায়, করোনায় সরকারের রাজস্ব আয় যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্য কর কর্তা ও কর্মচারিদের অফিসে আসা নিশ্চিত করতে কিছু ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে একটি হলো, প্রত্যেকের অফিস উপস্থিতি নিশ্চিত করে রাজস্ব বোর্ডে রিপোর্ট প্রেরণ । এই রিপোর্টে প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারির অফিসে উপস্থিতির ছবি দিতে হবে। এমনকি অনলাইনে ভিডিও ক্লিপ পাঠানোও যেতে পারে। এই রিপোর্টগুলো সংশ্লিষ্ট সদস্যরা দেখবেন। এমনকি বোর্ড চেয়ারম্যানও পর্যবেক্ষণ করবেন। আয়কর বিভাগ ছাড়াও শুল্ক, ভ্যাট কর্মকর্তা কর্মচারিরাও একইভাবে তাদের রিপোর্ট পাঠাবেন বলে জানা যায়।
[৭] নাম প্রকাশ না করে একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের রাজস্ব আয় গত ২ বছর আগে যা ছিল তার চেয়ে বর্তমানে ২ শতাংশ কমে গেছে। করোনা মোকাবেলায় সরকারের ব্যায় বৃদ্ধির জন্য আয় বৃদ্ধি জরুরি।এই আয় বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা জরুরি । যার জন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
[৮] সম্প্রতি রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম জানিয়েছেন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য তিনি বকেয়া আদায় নিশ্চিত করা ও বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় আটকে থাকা রাজস্ব আদায়ে তিনি জোড় দিয়েছেন। এরজন্যই কর্মকর্তা কর্মচারিদের উপস্থিতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি জানান।