ডেস্ক রিপোর্ট : ইয়েমেনে চলা গৃহযুদ্ধে কখন, কোথায়, কার ওপর হামলা হচ্ছে তার কোনো ইয়াত্তা নেই। তেমনি এক হামলার শিকার হয়েছে রুয়াইদা নামের ছয় বছরের এক শিশু। খাবার পানি আনতে গিয়ে স্নাইপারের গুলিতে সড়কে ঝরল রুয়াইদার তাজা রুক্ত। আর এ দৃশ্য দেখে জীবন বাজি রেখে বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেল ভাই ওমরি।
ওমরি বলেন, বোন রুয়াইদাকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কারণ বোনের জন্য আমার অনেক ভয় লাগছিল।
রুয়াইদার দাদি জাকিয়া সালেহ বলেন, ছয় বছরের নাতনির শরীর থেকে রক্ত ঝরা দেখে আমি সেখানে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার হাঁটু অবশ ও মাথা ঘুরছিল। তখন উঠে দাঁড়াতেও পারছিলাম না।
তিনি বলেন, রুয়াইদার হাতে তো কোনো অস্ত্র ছিল না। বাড়ির জন্য খাবার পানি আনতে গিয়েছিল সে। তাকেও রেহাই দিল না পাষণ্ডরা।
এদিকে রুয়াইদা ও তার ভাইয়ের ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেটিজেনরা। সবাই রুয়াইদাকে ‘ওয়াটার গার্ল’ হিসেবে ডাকা শুরু করেন। আর ভাইয়ের সাহসের জন্য সবাই প্রশংসাও করেন।
রুয়াইদার ওপর হামলা হওয়া এলাকাটি হুথি বিদ্রোহীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
স্থানীয় সংবাদিক আহমদে হাযা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, শিশুদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চলছে। ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৪৪ শিশুকে স্নাইপারের গুলিতে মারা হয়েছে। আর হুথি বিদ্রোহীদের গোলাবারুদের হামলায় মারা গেছে আরো ১০০ শিশু। এদের রক্ষা করার কেউ নেই।
রুয়াইদার চাচা আলী সালেহ বলেন, হাসপাতালে রুয়াইদার মাথার ভাঙা খুলির চিকিৎসা করা হয়। সে বাঁচতে পারবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তার অবস্থা এখনো বেশ সঙ্কটাপন্ন।
তিনি বলেন, রুয়াইদার পরিবারে এই প্রথম আঘাত নয়, আগেও তার পরিবারের ওপর হামলা করা হয়েছে। আগের এক হামলায় রুয়াইদার দাদি অর্থ্যাৎ আমাদের মা জাকিয়ার একটি হাত উড়ে যায়।
আলী সালেহ আরো বলেন, বোনের দুঃচিন্তায় তার ভাই ওমরি কোনো কোনো রাতে ঘুমাতে পারে না। বোন অব্যশই ফিরে আসবে বলে সান্ত্বনা দেই।
রুয়াইদাদের বাড়ি ইয়েমেনের তাইয শহরে। এ শহরকে অবরুদ্ধ শহর বলা হয়। এ শহরে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ সবচেয়ে তীব্র। শরহটির এখন বলা হয় ‘স্নাইপারের শহর’। রুয়াইদার ওপর হামলার পর তার পরিবার হিমশিম খাচ্ছে।
সূত্র- বিবিসি বাংলা।
আপনার মতামত লিখুন :