বিনোদন ডেস্ক : সুশান্ত সিং রাজপুতের অপমৃত্যু যতটা নাড়া দিয়েছে ভক্তদের হৃদয়, ততটাই তোলপাড় করেছে বলিউড দুনিয়াকে। স্বজনপ্রীতি থেকে শুরু করে প্রেম, ঘৃণা, রাজনীতিসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে। এসেছে বলিউড দুনিয়ার কালো অধ্যায়। আর এই অধ্যায়ের একটা বড় অংশে জুড়ে আছে মাদক। সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী প্রথমে মাদক গ্রহণ এবং জোগানোর দায়ে অভিযুক্ত হন। সে সূত্রে কথা ওঠে, বলিউডের অনেকেই মাদকাসক্ত। খোদ ‘বলিউডের কুইন’ কঙ্গনা রানৌত ভারতের রিপাবলিক টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, বলিউডের ৯৯ শতাংশ তারকাই মাদকাসক্ত।
ভারতের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান সংস্থা (সিবিআই) তদন্তের সময় মাদকের বিষয়গুলো সংবাদমাধ্যমে বড় করে সামনে আসে। সিবিআই কর্মকর্তাদের তদন্তে বেশ কিছু মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সুশান্তের মাদক গ্রহণের তথ্য সামনে আসে। সুশান্তের বাড়ির দুই কর্মী নীরজ আর দীপেশ সিবিআইকে জানিয়েছিলেন, গাঁজা খেতেন তরুণ এ অভিনেতা। কিন্তু ছাড়তে চেয়েছিলেন মাদক। এদিকে অভিনেতার বাবা এফআইআরে লিখেছিলেন নিয়মিত বেশি মাত্রায় ড্রাগ দিয়েই তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলেছে রিয়া চক্রবর্তী ও তার পরিবার। মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে মাদক চক্রের যোগের হদিস মেলার পর থেকেই হইচই দেশজুড়ে। সূত্র : প্রথমআলো
আলোচনা ডালা মেলে। এ পর্যায়ে নাম উল্লেখ করে বেশ কিছু বলিউড তারকাকে ডোপ টেস্ট করাতে বললেন কঙ্গনা। তাঁর দাবি, রণবীর সিং, রণবীর কাপুর, অয়ন মুখোপাধ্যায়, ভিকি কৌশলরা কোকেনে আসক্ত। টুইট বার্তায় কঙ্গনা লেখেন, ‘আমি অনুরোধ করছি রণবীর সিং, রণবীর কাপুর, অয়ন মুখোপাধ্যায় ও ভিকি কৌশলকে নিজেদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করাতে। ড্রাগ টেস্টের জন্য। গুঞ্জন শুনছি, তাঁরা কোকেনে আসক্ত। আমি চাই তাঁরা এই গুঞ্জনটা মিথ্যা প্রমাণ করুক। যদি তাঁদের নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে এই যুবকেরা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রেরণা দেবেন।’ শুধু টুইট করেই থেমে থাকেননি, রীতিমতো এই টুইটে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকেও ট্যাগ করেন ‘আলোচিত, বিতর্কিত, মুখরা’ এই নায়িকা।
এর আগে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মনজিন্দর সিং সিরসা করণ জোহরের পার্টির একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাঁর দাবি ছিল, উপস্থিত সবাই ড্রাগের নেশা করে রয়েছেন। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে রণবীর সিং, অয়ন মুখার্জি, ভিকি কৌশল, দীপিকা পাড়ুকোন, অর্জুন কাপুর, মালাইকা আরোরা, শাহিদ কাপুর,বরুণ ধাওয়ানদের। করণের বাড়ির ভেতরের এই ভিডিওটি শুরুতে করণ নিজেই পোস্ট করেছিলেন। কিন্তু বিতর্ক মাথাচাড়া দিলে তড়িঘড়ি সেই ভিডিও ডিলিট করে দেন এই প্রযোজক।
অভিযোগ খারিজ করে দেন করণ জোহরের এক বন্ধু। প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, যদি এমনটা হতো তাহলে তিনি নিজে কি সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেন? ভিকির পেছনে থাকা সাদা রঙের যে বস্তুটি দেখে সবাই মাদক ভাবছে, সেটি আসলে একটি আলোর প্রতিচ্ছবি। দাবি করেন ধর্মা প্রডাকশনের কর্ণধার করণ জোহর।
সিবিআই তদন্তে মাদকের যোগসূত্রের পর গত সপ্তাহেই ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো একটি মামলা করে। সেই সঙ্গে এ বিভাগটি আলাদা করে তদন্তও শুরু করে। ঘটনায় মাদকসেবন, মাদক-সম্পর্কিত কোনো যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। কারণ কয়েক দিন আগে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সুশান্তকে জোর করে মাদক খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হতো। এমনকি দুবাইয়ের ড্রাগ ব্যবসায়ীর সঙ্গে মৃত্যুর দিন সুশান্তের দেখা হয়েছে বলে দাবি তুলেছেন বিজেপির নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। গত মঙ্গলবার রাতে দুই ড্রাগ সরবরাহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো। করণ ও আব্বাস নামের ওই দুই ব্যক্তি বলিউডের অন্দরে ড্রাগ সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া এই দুজন এমন কিছু তারকার নাম বলেছেন যাঁরা এই সম্পূর্ণ চক্রের দেখভাল করতেন।
আপনার মতামত লিখুন :