সাঈদ তারেক: তাই বলে এভাবে। এখনও মনে হচ্ছে না বেঙ্গল চলে গেছে। এরকম প্রাণশক্তিতে ভরপুর একজন সুস্থ সবল মানুষ এভাবে না বলেকয়ে হুট করে অনন্তের পথে পাড়ি জমাবে এটা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। কাল একজনের ফেসবুক পোস্টে এক ঝলক সংবাদটা দেখে মনে হয়েছিল কেউ বুঝি ইয়ার্কি করছে। এমন ইয়ার্কি তো অনেকেই করে। কিন্তু না, কিছুক্ষণের মধ্যে নিউজটা কনফার্ম হয়ে এলো। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমার ঘোর কাটেনি। কারণ ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল ছিল আমার একজন অন্যতম ভালো বন্ধু। এক সময় একসাথে রাজনীতি করেছি। অনেক সুখ-দুঃখের স্মৃতি। প্রচণ্ড সাহসী সৎ এবং বিনয়ী এই বন্ধুটি ছিলো আমার খুবই কাছের। ওর এভাবে চলে যাওয়ায় সত্যি বলতে কী বেশ মুষড়ে পড়েছি। পরে অবশ্য জানলাম, আগে থেকেই হার্টের জটিলতায় ভুগছিল, করোনার আঘাতটা সামাল দিতে পারেনি।
৩১ আস্ট আরও কয়েকজনের মৃত্যু সংবাদ পেলাম। একজন আমার খুবই প্রিয় মানুষ ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ভাই। অন্যজন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি বাবু প্রণব মুখার্জি। উনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছেন। ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন অকৃত্রিম শুভাকাক্সক্ষী এবং বন্ধু। তার মৃত্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাইছি না।
কোরেশী ভাই ছিলেন একজন রাজনীতিক সাংবাদিক এবং দৃঢ়চেতা সাহসী ব্যক্তিত্ব। প্রচুর পড়াশোনা করতেন। বিভিন্ন বিষয়ে ছিল অগাধ জ্ঞান। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশবাংলা বের করতেন। তার কাগজে কখনো কাজ করা হয়নি আমার তবে মাঝেমাঝেই যাওয়া পড়তো অফিসে। খুব কনফিডেন্টলি কথা বলতেন। এক সময় আমি তার ব্যক্তিত্ব পান্ডিত্ব এবং বন্ধুসুলভ ব্যবহারের ভক্ত হয়ে যাই। কয়েক বছর থেকেই অসুস্থ হয়ে বাসা থাকতেন। মাঝে প্রেসক্লাবে এসেছেন কয়েকবার। দীর্ঘ সময় আড্ডা দিয়েছি। করোনা থেকে প্রায় শয্যাশায়ীই ছিলেন। সবাইকেই এক সময় চলে যেতে হবে তারপরও যেকোনো মৃত্যুই বেদনার। কোরেশী ভাইয়ের চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া গেলেও বেঙ্গলের এভাবে হঠাৎ তিরোধান আমার কাছে অবিশ্বাস্য হয়েই থাকবে। মনে হবে হয়তো কোথাও দেখা হয়ে যাবে। ফোনে কথা হবে, বরাবরের মতো ফেসবুকে আমার কোনো পোস্টে কমেন্ট করে বসবে। যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন শান্তিতে থাকুন। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :