ডেস্ক রিপোর্ট : পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অনেকটা জায়গা ছিল খানাখন্দে ভরা। তার ওপর টানা বৃষ্টিতে ওইসব খানাখন্দ আর গর্তে ভরা সড়কে পানি জমে বেহাল দশা হয়ে যায়। যানবাহন উল্টে গিয়ে যাত্রীদের আহত হওয়া ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। লোকমুখে শুনে আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এমন খবরে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি তরুণ সমাজসেবক, প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া। সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে নিজ অর্থায়নে ফেলেন সড়ক সংস্কার। ঘটনাটি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াদহ ইউনিয়নের কালিতলা এলাকার।
উপজেলার সাধুহাটি-তৈলটুপি লালন সড়কের জোড়াদহ কালিতলা এলাকায় সড়কের ওপর বিটুমিন ও খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছিল খানাখন্দ ও গর্তের। সেখানে পানি জমে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। জনসাধারণ আর যান চলাচলে চরম ভোগান্তি ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। এ অবস্থায় বাবু মিয়া নিজ অর্থায়নে ওই বেহাল সড়কটি সংস্কার করে জনদুর্ভোগ লাঘব করলেন। এ উদ্যোগে তিনি খোয়া ও বালু আনান স্থানীয়দের মাধ্যমে।
জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া বলেন, প্রবাসে থাকলেও সড়কটি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা শুনে খুব খারাপ লাগে। তারপর উদ্যোগটি নিই। জোড়াদহ ইউনিয়নবাসীর যে কোনও প্রয়োজন আর দুযোর্গে আজীবন পাশে থেকে সেবা করে যাবেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলা এলজিইডি দফতর সূত্রে জানা যায়, শহরের দোয়েল চত্বর মোড় থেকে তৈলটুপি পর্যন্ত সড়কটি ১৬ কিলোমিটার। ২০০০ সালে সড়কটির কার্পেটিংয়ের কাজ হয়। এরমধ্যে ভবানিপুর বটতলা থেকে জোড়াদহ বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক ৫ বছর আগে সংস্কার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, গত প্রায় ৪-৫ বছর ধরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে, কার্পেটিং উঠে বেহাল দশা হয়। বিশেষত জোড়াদহ কালিতলা এলাকায় সড়কের বিটুমিন ও খোয়া উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন জানান, বেহাল এই সড়কে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হয়। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার বলার পরও সাড়া মেলে না। এই বর্ষায় সড়কটি একেবারেই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।
কালিতলা বাজারের ব্যবসায়ী ডা. মো. হেলাল উদ্দিন জানান, মাঝে মাঝে এখানে বেহাল সড়কের ওপর দুর্ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়কের বেহাল দশা আর জনদুর্ভোগের কথা জেনে তরুণ সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। এ সময় বাবু তাকে বলেন, যত টাকা লাগবে তিনি দিবেন। আপনারা সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু করেন। তাই বাবু মিয়ার অর্থায়নে আমরা ইট, খোয়া আর বালু এনে সড়কটি মেরামতের কাজ শুরু করেছি।
তিনি আরও জানান, তরুণ সমাজসেবক বাবু মিয়া ইতিমধ্যে জোড়াদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ভাঙাচোরা সড়ক নিজ অর্থায়নে মেরামত করেছেন। এছাড়াও ইউনিয়নের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, ভর্তি, অসহায় মানুষদের নিজ অর্থায়নের চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ নানা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেনে। তিনি একজন তরুণ সমাজসেবক হিসেবে ইতিমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছেন। এছাড়াও করোনাকালে সমাজসেবক বাবু মিয়া ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে অসহায়দের মাঝে ত্রাণসামগ্রী ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে প্রশংসিত হন।বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :