তন্নীমা আক্তার : ট্রেলারেই আভাস মিলেছিল। টানা ৯টি এপিসোড দেখার পর বিশ্বাস আরও জোরদার হল। পরিচালক প্রকাশ ঝার ডেবিউ ওয়েব সিরিজ ‘আশ্রম’-এর প্রতিটি পরতে রয়েছে স্বঘোষিত গডম্যান রাম রহিমের ছায়া। জাতপাতের বৈষম্য, মানুষের অন্ধবিশ্বাস আর তাঁর সুযোগ নিয়ে খুন, ধর্ষণ থেকে নির্বীজকরণ। সমস্ত উপাদানই মজুত রয়েছে ৯ এপিসোডের সিরিজে। সেই সঙ্গে রয়েছে নয়ের দশকের পরিচালক প্রকাশ ঝার ছাপ।
গণতন্ত্রের চেনা চেহারা দিয়েই কাহিনির সূত্রপাত হয়। সেই সূত্র ধরেই স্বঘোষিত গডম্যান কাশীপুরওয়ালে বাবা ওরফে বাবা নিরালা ওরফে মন্টির কাহিনিতে পৌঁছায়। বাবা নিরালার চরিত্রে ববি দেওলকে বেছেছেন পরিচালক। তাঁকে সেই চেহারাও দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও ববির মধ্যে সাবলীলতার অভাব রয়েছে। তবে মন্টির ভয় মেশানো হিংস্রতার সময়ে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন। বাবা নিরালার ডানহাত ভোপের ভূমিকায় চন্দন রায় সান্যাল নিজের প্রতিভার সদ্ব্যবহার করেছেন। তবে তাঁর একটি দৃশ্য নিয়ে মনে প্রশ্ন রয়েছে। কাহিনির শুরুর দিকে ভোপে তরুণীকে খুন করতে তার পিছু নয়। তারপর ধরে ফেলে আচমকা পকেট থেকে ছুরি বের করে। ক্ষুরধার ছুরি পকেটে বিপজ্জনকভাবে রেখে কি অতটা দৌড়ে তারপর খুন করা যায়?
পোড় খাওয়া অভিনেতাদের পাশাপাশি নতুনদের নিয়ে কাজ করেছেন প্রকাশ। পম্মির চরিত্রে অদিতি পোহাঙ্কর, সত্তির চরিত্রে তুষার পাণ্ডের অভিনয় বিশ্বাসযোগ্য। তবে অধ্যয়ন সুমন এবার অন্য পেশায় মন দিলেই বোধহয় ভাল হয়। বাঙালির কাছে পাওনা ত্রিধা চৌধুরীর সৌন্দর্য। সবচেয়ে বেশি প্রশংসা যদি কারও প্রাপ্য হয় তা অভিনেতা দর্শন কুমারের। রাফ অ্যান্ড টাফ পুলিশ উজাগর সিংয়ের চরিত্রে নিজেকে উজার করে দিয়েছেন দর্শন। নয়ের দশকের মনোজ বাজপেয়ীর কথা মনে করিয়েছেন। তবে এখানেও একটি প্রশ্ন রয়েছে পরিচালকের জন্য। যে উজাগর পম্মিকে উচুজাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ না জানানোর জন্য হুমকি দিয়েছিল, সেই উজাগরের বিবেক ডক্টর নাতাশার (অনুপ্রিয়া গোয়েঙ্কা) মাত্র কয়েকটি কথাতেই আচমকা কীভাবে জাগ্রত হয়ে গেল?
এমনই কিছু প্রশ্ন বাদ দিলে একবার ম্যাক্স প্লেয়ার এ বিনামূল্যে ‘আশ্রম’-এর দর্শন করাই যায়। তবে এবেলা অসমাপ্ত মনেই থাকতে হবে দর্শকদের। কারণ শেষে নতুন মরশুমের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
আপনার মতামত লিখুন :