মো. আখতারুজ্জামান: [২] করোনা মহামারীর মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। যদিও করোনার শুরু থেকে অর্থনীতিবিদরা বলে আসছিলেন যে বৈদেশিক আয় কমে যাবে। বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। আলোচিত সময়ে প্রতিনিয়ত রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
[৩] কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, আগস্টের প্রথম ২০ দিনে প্রবাসীরা ১৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। গেলো বছর পুরো আগস্টেই রেমিটেন্স এসেছিলো ১৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
[৪] তবে বর্তমান যে রেমিটেন্স প্রবাহ রয়েছে তা আগামীতে কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। যদিও তিনি করোনার শুরু থেকেই রেমিটেন্স প্রবাহের এই শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই রিজার্ভ ৩ হাজার ৯শ কোটি ডলার ছাড়াবে বলে প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
[৬] চলতি বছরের জুলাইতে ২৬০ কোটি এবং জুনে রেমিটেন্স এসেছিলো ১৮৩ কোটি ডলার। এছাড়া জুলাই মাসে রপ্তানিও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৩৪৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয় ৩৯১ কোটি ডলার। যা আগের বছরের জুলাই মাসের রপ্তানির চেয়েও বেশি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এই প্রতিবেদককে জানান, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বেশি আসায় তিনটি বিষয় কাজ করছে। প্রথমত ঈদের সময়, নির্বাচনের সময় দেশের রেমিটেন্স বেশি আসে। স¤প্রতি আমরা সেটাই লক্ষ্য করছি। করোনার কারণে আমাদের দেশে মানুষের আয় কমে যাওয়ায় প্রবাসীরা তাদের স্বজনের জন্য বেশি পরিমাণে অর্থ পাঠিয়েছে। দ্বিতীয়ত প্রবাসীরা এখন যা পাঠাচ্ছেন সেটা তাদের শেষ সঞ্চয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন অনেক দেশেই এখনও বাংলাদেশ রুটে বিমান চালু হয়নি। বিমান চালু হলে অনেক প্রবাসী দেশে চলে আসবেন। তাই চলে আসার আগে তাদের সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন।
[৭] তৃতীয়ত সরকার বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রনোদনা দেয়ায় রেমিটেন্স আয় বেড়েছে। কারণ আগে যেটা বেআইনিভাবে দেশে আসত এখন সেটা বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বেশি আসছে।
[৮] এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক আয়ের যে প্রবাহ রয়েছে সেটা দেখে আত্মতৃপ্ত হওয়ার কিছু নেই। করোনাকালে আমরা কোনো প্রবাসীকে পাঠাতে পারিনি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশে বিদেশিদেরকে ছাঁটাই করে নিজেদের দেশের লোকদেরকে কাজ দিচ্ছে। আগামী দিনে এখন যে রেমিটেন্সের প্রবাহ আছে সেটার নিশ্চয়তা নেই। তাই গত কয়েক মাসে যে পরিমাণ বৈদেশি মুদ্রা এসেছে তা দেখে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই।
আপনার মতামত লিখুন :