রাশিদ রিয়াজ : ভারতের টাটা গ্রুপের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার কোটি ডলার বা ৮ লাখ ২৪ হাজার কোটি রুপির বেশি। নুন থেকে হীরা, নানা রকমের পণ্যের ব্যবসা করে টাটার বিভিন্ন কোম্পানি। একইসঙ্গে নানা পরিষেবাও দিয়ে থাকে টাটা গ্রুপ। এবার তারা নামছে অনলাইন ব্যবসায়। একটি অ্যাপেই সবরকম পণ্য ও পরিষেবা বিক্রি করবে টাটা। এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে আসবে ওই অ্যাপ। টাইমস অব ইন্ডিয়া
সিসকো সিস্টেম ইনকর্পোরেটেডের সমীক্ষা বলছে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হবে ৯০ কোটি। এদের হাতে থাকবে স্মার্টফোন। তারা অনলাইনে নানা পণ্য কেনাকাটা করবেন। আর ওই সময়ের মধ্যে অনলাইন ব্যবসা পুরোদমে শুরু করবে টাটা।
এরই মধ্যে ভারতে অনলাইন ব্যবসায় জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের মধ্যে। অনলাইন ব্যবসায় বিরাট অঙ্কের পুঁজি বিনিয়োগ করছে শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর রিলায়েন্স। এ কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে ২ হাজার কোটি ডলার। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আছে ফেসবুক ও গুগলের মতো সংস্থা। অন্যদিকে অ্যামাজন ভারতে ৬৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।
টাটার অ্যাপ বানানোর দায়িত্ব পেয়েছেন টাটা ডিজিটালের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার প্রতীক পাল। প্রায় তিন দশক ধরে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসে চাকরি করছেন প্রতীক। টাটা গ্রুপের এক প্রতিনিধি বলেন, অতীতে ওয়ালমার্ট, টেসকো, আলডি ইনকর্পোরেটেড, টার্গেট কর্পোরেশন, বেস্ট বাই কর্পোরেশন এবং স্পেনসার গ্রুপের ডিজিটাল ব্যবসায় সহায়তা করেছেন প্রতীক পাল।
টাটার অন ইন ওয়ান অ্যাপে কোনও ক্রেতা গাড়ি, এয়ার কন্ডিশনার, স্মার্ট ওয়াচ কিংবা চা কিনতে পারবেন। বুক করতে পারবেন বিলাসবহুল হোটেলের কামরা। এদিকে চেন্নাই ও মুম্বাইতে আগেই ল্যান্ডিং স্টেশন বানিয়েছে রিলায়েন্স জিও। পশ্চিমবাংলার দিঘায় এমন ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কেবলকে স্থানীয় কেবলের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এটি করবে রিলায়েন্স জিও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দিঘায় এই ডেটা সেন্টার হলে তা উত্তর-পূর্ব ভারতের সমস্ত সাইবার কোম্পানির জন্য খুবই সহায়ক হবে। উচ্চগতির নেট পরিষেবা ও ডেটা ট্রান্সফারের পরিকাঠামো দেওয়াই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের কাজ।
এজন্যে জিওকে জমি দিয়েছে পশ্চিমবাংলা সরকার। ব্রডব্যান্ড নীতি পরিবর্তন করা হচ্ছে। যাতে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়।
এছাড়া টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে এয়ারটেল, ভোডাফোন যখন ৪৭ লাখ গ্রাহক হারিয়েছে তখান ৩৭ লাখের বেশি নতুন গ্রাহক পেয়েছে জিও। ভারতের সরকারি টেলিকম সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড মে মাসে মোট ২ লাখ ১ হাজার ৫৯৩ জন নতুন গ্রাহক পেয়েছে। এর মাসে মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার বিশাল বাজার তৈরি হচ্ছে ভারতে। জিওর গ্রাহক সংখ্যা ৩৯.৩৭ কোটি। এয়ারটেলের ১৪.৫৯ কোটি, ভোডাফোনের ১১.৩ কোটি এবং বিএসএনএল-এর ২.২ কোটি। জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হবে অনলাইন ব্যবসা নিয়ে এসব কোম্পানির মধ্যেই।
আপনার মতামত লিখুন :