ডেস্ক রিপোর্ট : অভিযুক্তদের ভাষ্য, তারা ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মুঠোফোন কিংবা অনলাইনে নানান ধরনের প্রোডাক্ট অর্ডার সরবরাহ করে
ই-কমার্স ওয়েবসাইট ইভ্যালির নাম ভাঙিয়ে টাকা নিয়ে সময়মতো গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী পণ্য না দেওয়াসহ নানা অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লা। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৩৯ লাখ নগদ টাকা।
সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার পারিল বাজারে অবস্থিত ইভ্যালির কথিত কার্যালয় থেকে ম্যানেজার বিপ্লবকে (২৫) আটক করেন ইউএনও।
ইউএনও জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অভিযুক্তরা গ্রাহককে বেশি মুনাফার প্রলোভন ও বিভিন্ন পণ্যের আকর্ষণীয় অফার দিতো। কিন্তু তারা সময়মতো পণ্য না দিয়ে বেশ কয়েকমাস ধরে প্রতারণা করে আসছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃত বাকি দুইজন হলো- ববিদুল ইসলাম (২৫) ও জামাল (৩৮)।
তবে এই তিন অভিযুক্ত কিংবা মানিকগঞ্জের প্রতিষ্ঠানটি তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বলে জানিয়েছে ইভ্যালি।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল এ বিষয়ে বলেন, ওই তিনজনের কেউই ইভ্যালির সাথে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না। তাদের কাছে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত কোনো বৈধ নিয়োগপত্রও পাওয়া যাবে না। তারা ইভ্যালির প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে মাত্র।
একইসঙ্গে ওই প্রতারকদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানান রাসেল।
এ বিষয়ে ইভ্যালির বিজনেস ডেভলপমেন্ট ম্যানেজার রাহাত ইসলাম জানান, প্রোডাক্ট গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া আমাদের কোনো শাখা নেই। এছাড়া, আমরা কখনো নগদ লেনদেন করি না। আমাদের পুরো লেনদেনই হয় ডিজিটাল মাধ্যমে এবং ধৃত ব্যক্তিরাও আমাদের প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বা সাবেক কর্মী নন।
অভিযুক্তদের ভাষ্য, তারা ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মুঠোফোন কিংবা অনলাইনে নানান ধরনের পণ্য অর্ডার সরবরাহ করে। এর আড়ালে তারা অল্প দিনে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিদিন বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েছিল।
এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো ব্যাংক একাউন্ট নেই। তারা লেনদেনের বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম যেমন- বিকাশ, নগদ ইত্যাদি ব্যবহার করতো।
“মানিকগঞ্জের এক সরকারি চাকরিজীবীকে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চার লাখ বিনিয়োগ পনেরো দিনে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাদের প্রলোভনের মাত্রা অত্যাধিক হওয়ায় তিনি সরে এসেছেন।”
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির শাখার প্রধান হেনা আক্তার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে এই প্রতারণা করে আসছিল।
ইউএনও রুনা লায়লা আরও জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। ঢাকা ট্রিবিউন