আনিসুল হক, ভিয়েনা (অষ্ট্রিয়া) থেকে : [২] গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘২১ আগস্ট ২০০৪: ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়’ শীর্ষক সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ২১ আগস্ট শুক্রবার বিকেল ৬টায় অনুষ্ঠিত হয়।
[৩] এতে সভাপতিত্ব করেন, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান। তাঁকে সহযোগিতা করেন, ইঞ্জিনিয়ার হেদায়েতুউল ইসলাম শেলী ও ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান ভূইয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি। অনুষ্ঠানে ইউরোপের সব দেশের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন, তাঁরা হলেন, জাহাঙ্গীর করির, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজী, বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু, মোস্তফা মজুমদার বাচ্চু, শাহাদাত হোসেন তপন, খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, জহিরুল ইসলাম জসিম, ডা. ফরহাদ আলী খান, মাইনুল ইসলাম, রিজভী আলম, বাবুল হাওলাদার, ইকবাল আহমেদ লিটন, হুমায়ুন কবির, মোস্তাফিজুর রহমান খান, শওকত ওসমান, কাওছার আমিন হওলাদার, মিজানুর খান, ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, যুবাইদুল হক সবুজ, কমরেড খোন্দকার প্রমুখ।
[৪] অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগষ্টের সমাবেশে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম, সেদিন আমাদের সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী। সেদিন আমাদের সমাবেশে বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রটোকল অনুয়ায়ী কোন প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে কোন প্রকার নিরাপত্তার জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বিকাল ৫:২৫ মিনিটের দিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলা শুরু হয়। প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম বোমা হামলা, পরে বুঝতে বাকী রইলো না যে সে গুলো ছিলো গ্রেনেড হামলা। আর হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিলো যুদ্ধে ব্যবহার করা গ্রেনেড । মোট ১৬ টা গ্রেনেডর মধ্যে ১৩ টা বিস্ফোরিত হয় বাকী ৩ টি অবিস্ফোরিত থাকে।
[৫] আমরা যদি মনে করি যে প্রত্যেকেটা গ্রেনেডে পাঁচ হাজার করে স্পিন্টার থাকে তাহলে সেদিন মোট ৬৫ হাজার স্পিন্টার চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। আল্লাহর ইচ্ছায় সৌভাগ্যক্রমে একটা স্পিন্টারও আমাদের নেত্রীকে স্পর্শ করেনি। সেদিন পুলিশ আমাদের সাহায্য না করে উল্টা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ শুরু করে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ করার মূল কারণ ছিলো সেই সুযোগে গ্রেনেড হামলার মূল হোতাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলা ছিলো পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আওয়ামী লীগের নাম নিশানা মুছে ফেলা। ফারুক খান আরো বলেন, 'সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রবাসে বিএনপি-জামাতের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করুন।'
[৬] সভাপতির বক্তব্যে এম. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসরা একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি চিরতরে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ওই গণদুশমনরা বাংলা ও বাঙালির মধ্যমণি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার গভীর চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।' তিনি একুশে আগস্টের নারকীয় বর্বরতার পেছনে মুখ্য ভ’মিকা পালনকারী সেই তথাকথিত হাওয়া ভবনের কুশীলবর, সন্ত্রাস ও লুটপাটের রাজপুত্র তারেক জিয়াকে অভিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
[৭] মজিবুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাথে বিএনপি-জামাত সরাসরি জরিত ছিল। এই হামলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। গ্রেনেড হামলার মূল হুতা তারেক জিয়াকে দ্রæত দেশে ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ মামুন
আপনার মতামত লিখুন :