ডা. এ এন এম কিবরিয়া : বেশ কয়েক বছর আগের কথা, আমার পোস্টিং তখন চট্টগ্রামের শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকা থেকে বদলি হয়ে এলেন। চিকিৎসা গ্রহণার্থে আমার কাছে এলে কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, উনার এক সন্তান ‘স্পেশাল চাইল্ড’। খুব আফসোস করলেন এই বদলিটি হওয়ার জন্য, ফ্যামিলি চট্টগ্রাম আনবেন কিনা বা আনলে সন্তানের পড়াশোনা-চিকিৎসা কীভাবে হবেÑ তা নিয়ে যারপরনাই উদ্বিগ্ন ছিলেন। চেষ্টা করছিলেন কীভাবে পুনরায় ঢাকাতে ট্রান্সফার হওয়া যায় তার জন্য, যদিও এ ব্যাপারে দ্রুত কিছু হবে কিনাÑ তা নিয়ে স্কেপটিক ছিলেন। এক পর্যায়ে উনার বদলির অর্ডার হয়ে গেলো। কিন্তু কীভাবে হলো, সেটা জানানোর জন্যই এই পোস্ট যে বছর উনি চট্টগ্রাম এলেন, ঠিক তার আগের বছরই ঢাকায় ‘স্পেশাল চাইল্ডদের একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতায় তার সন্তান পুরষ্কার লাভ করে এবং সায়মা পুতুলের কাছ থেকেই পুরষ্কারটি গ্রহণ করে (আমরা সবাই ‘অটিজম’ সংক্রান্ত বিষয়ে সায়মা পুতুলের পড়াশোনা, ব্যক্তিগত আগ্রহ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার কনসিস্টেন্ট কন্ট্রিবিউশানের কথা জানি)।
পরের বছর একই প্রতিযোগীতায় পুরস্কার বিতরণ করতে এসে, পুতুল আগের বছরের প্রতিযোগীদের ঠিকই মনে রেখেছিলেন (যদিও এর মাঝে তিনি এজ ইজ্যুয়াল বিদেশে ব্যস্ত ছিলেন); আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলীর সন্তানকে না দেখতে পেয়ে উনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘ও কোথায়? খোঁজ নিয়ে আমাকে জানান!’ যখন তাকে জানানো হলো, বাবার বদলিজনিত কারণে সন্তানটি এবার অংশগ্রহণ করতে পারেনি, তখন তিনি অবিলম্বে উনাকে ঢাকায় বদলির ব্যবস্থা নিতে বললেন। যারা ‘স্পেশাল চাইল্ড’ নিয়ে কাজ করে, এমনিতেই তারা নিজেরাও ‘স্পেশাল’, আমার পরিচিতজনদের মাঝে যাদের বাচ্চা ‘স্পেশাল চাইল্ড’, তাদের মোটিভেইট করি। বিশেষ ওই ঘটনায় সায়মা পুতুলের ‘সেন্সিটিভিটি’ আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :