মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা: মনে আছে, মাস দুয়েক আগে অনেকেই আশা করছিলো চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই সিরত তুর্কি ব্যাকড জিএনএর দখলে চলে যাবে, এরপর কয়েকদিনের মধ্যেই তারা বেনগাজির কাছাকাছি পৌঁছে যাবে? সমগ্র লিবিয়া মুক্ত করে ফেলবে? ওয়েল, এই দুই মাসে তার কিছুই হয়নি। বরং তখনই যেটা বলেছিলাম, সিরতের আশেপাশে কোথাও রাশিয়া এবং তুর্কির মধ্যে একটা লাইন টানা হবে, মোটামুটি সেটাই হয়েছে। রাশিয়া এবং তুর্কির মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। জিএনএর প্রেসিডেন্ট ফায়েজ আল-সাররাজ এবং হাফতারের পক্ষের পার্লামেন্টের স্পিকার আগিলা সালাহ পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতি অনুযায়ী সিরত এবং জুফরা হবে নন-মিলিটারাইজড জোন, সকল বিদেশি মার্সেনারি উইথড্র করা হবে, অয়েল ব্লকেডের অবসান ঘটানো হবে, আপাতত সিরত হবে জিএনএর প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলের অস্থায়ী সিট এবং আগামী বছরের মার্চে প্রেসিডেনশিয়াল ও পার্লামেন্টারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদিও সমঝোতা মূলত তুর্কি এবং রাশিয়ার মধ্যে হয়েছে, কিন্তু এর পেছনে আমেরিকার হিউজ ডিপ্লোম্যাসি ছিলো। অন্তত নির্বাচনের আগে ট্রাম্প প্রশাসন লিবিয়াতে নতুন কোনো যুদ্ধ দেখতে চায় না, বিশেষ করে যে যুদ্ধে রাশিয়া জয়ের পথে এগুলো তাদের নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। সে জন্য গত কয়েক সপ্তায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ হাই প্রোফাইল ডেলিগেট লিবিয়া সফর করেছে এবং উভয় পক্ষকে সিজফায়ারের জন্য চাপ দিয়েছে। সিরতকে ডিমিলিটারাইজড জোন করার কথাসহ সমঝোতার যে শর্তগুলো দেখা যাচ্ছে, সেগুলো তারাই প্রথমে বলেছিলো।
এই সমঝোতা নিঃসন্দেহ বিশাল অগ্রগতি, কিন্তু বাস্তবে আপাতত খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু দেখছি না। তুর্কি তাদের আট- নয় হাজার সিরিয়ান মার্সেনারি ফেরত নেবে না। রাশিয়া যদি ওয়াগনারদের সরিয়ে নেয়ও, হাফতার- ইমারাত তাদের তিন- চার হাজার সুদানি এবং আরো কয়েক হাজার সিরিয়ান মার্সেনারি ফেরত নেবে না। সিরতে উভয় পক্ষের ‘পুলিশ’ টহল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটার সম্ভাবনা আছে। মার্চে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, ওটা যদি হয় আমি সেটাকে অলৌকিক বলবো এবং এই সিজ ফায়ারের সবচেয়ে দুর্বল দিক যেটা, ওয়াগনারের সেট করা মাইনগুলোর ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তারপরেও সরাসরি যুদ্ধ যে এই মুহূর্তে হচ্ছে না, সেটাই বিশাল ব্যাপার। হোপ ফর দ্য বেস্ট। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :