শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৫ দুপুর
আপডেট : ২১ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওয়ালিউর রহমান: ইতিহাসের জঘন্যতম রাজনৈতিক হামলা

ওয়ালিউর রহমান: শোকের মাস আগস্ট মাস । আমরা বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যা এবং তার পরিবারের সকলের হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে যখন আমরা উদ্বিগ্ন, যখন আমরা জাতির পিতাকে হারানোর পর শোকে কাতর, যখন আমরা তার শান্তির জন্য মসজিদ, মন্দির, গির্জাতে প্রার্থনা করছি ঠিক তখনই ‘হাওয়া ভবনের’ কালো হাত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এই গ্রেনেড হামলার পূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করল। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন তার বক্তব্য শেষ করে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে নামবে ঠিক সেই মুহূর্তে মাত্র দেড় মিনিটে ১১টি গ্রেনেড হামলা হয়। তখন আমাদের সিনিয়র নেতারা তাঁকে ঘেরাও করে মানব ঢাল তৈরি করে- যাতে আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যার গায়ে আঘাত না লাগে। কোনো রকম ভাবে তাঁকে বুলেট প্রুফ গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে, ধানমন্ডি ৫ নম্বর সুধাসদনে নিয়ে যাওয়া হয়। চারদিকে তখন আহাজারি। কারো হাত নেই, কারো পা নেই। সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে সবাই তখন রক্তে জর্জরিত। আমি তখন ছিলাম ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড বিষয়ক এক আলোচনা সভায় সেরাটন হোটেলে, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি তড়িৎ গতিতে চলে আসলাম সুধাসদনে, এসে দেখি আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ঘরের কোণার চেয়ারে বসে আছেন। আমাকে দেখে বললেন : ‘ওয়ালি ভাই, আপনি এসেছেন? ভালোই হলো। Now Go And Tell The Whole World This is the Democracy of Khaleda Zia!

তার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথোপকথনের পর আমি বেরিয়ে পরি বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের উদ্দেশ্যে ওখানে গিয়ে দেখি কী দুর্বিসহ অবস্থা। যেন নরকের এক প্রান্ত খোলা হয়েছে। নেতাকর্মীদের যেকোনো ভাবে নিয়া যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। আর লাশগুলো রাখা হচ্ছে এক গাড়িতে। সে কী লোমহর্ষ দৃশ্য। আমি ওখান থেকে তাড়াতাড়ি করে চলে গেলাম হাসপাতালে। প্রায় ৭ থেকে ৮টা হাসপাতালে ভর্তি ছিল প্রায় তিন শতাধিকেরও অধিক মানুষ। ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল নামক এক বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আরও ভয়াবহ দৃশ্য। আমি সেখানে গিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বললাম, তারা আমাকে বললো যে ,এখনই কিছু ইনজেকশন কিনতে হবে। আমি ইনজেকশন কিনার ব্যবস্থা করলাম। আমি ডিউটি ডাক্তারের সাথে কথা বলে কিছু টাকা ও আমার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করলাম। ভয়াল সেই স্পিøন্টারের আঘাতে আমাদের নেতাকর্মীরা দিনের পর দিন ভুগছে। তার মধ্যে একজনের কথা না বললেই না সে হচ্ছে মেয়র হানিফ। তার মাথায় গ্রেনেডের আঘাত লেগেছিল। তা নিয়ে সে দীর্ঘ দিন অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করে ২০০৬ সালে ইন্তেকাল করেন। জনাব সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত তার সাথে আমার দেখা হলেই আমাকে তার শরীরের স্পিøন্টারের তার পায়ের আঘাত ও তার ব্যথা সম্পর্কে বলতো। আমরা বন্ধু থাকায় সে আমাকে প্রায়সই এ নিয়ে কথা বলতেন। দিনের পর দিন সে কিভাবে এই ব্যাথা সহ্য করে গেছেন তা আমি দেখেছি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট কিন্তু বেশি ব্যবধান না। বিএনপি-জামায়াত দিনের পর দিন তাদের একটি মাত্রই পরিকল্পনা এই স্বাধীনতার শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চলা একমাত্র দল আওয়ামী লীগকে শেষ করে ফেলা। যার কারণে খালেদা জিয়া তার পুত্রকে এই জঘন্যতম হামলাতে সাহায্য করে। তার ছেলে তারেক রহমান, তার দলের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিস চৌধুরী, জামায়াতের ইসলামীর মহাসচিব ও তৎকালীন সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মজাহিদ তাদের সকলকে নিয়ে গুলশানের হাওয়া ভবনে এই পরিকল্পনা করেন। তারা পাকিস্তানিদের সাহায্য নিয়ে দিনের পর দিন এই দেশের ক্ষতি সাধন করে গেছেন। তথ্যমতে দেখা যায়, তারা যে গ্রেনেড ব্যবহার করেছে তা ও তারা পাকিস্তান থেকে এনেছেন। তারা হুজি বাহিনীর সাহায্যও নিয়েছিল এই হামলায়।
কতোটা স্বাধীনতাবিরোধী হলে মানুষ এমন কাজ করতে পারেন! যে স্বাধীনতার জন্য আমারা ৯ মাস যুদ্ধ করলাম দেশ স্বাধীন করলাম, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি,আর তাদেরই হাত ধরে তারা এমন নৃশংসহ কাজ করলো। যে দেশ স্বাধীন সে দেশে কীভাবে দুটো পক্ষ থাকে? কীভাবে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে তারা এমন জঘন্য কাজ করতে পারে। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এর রায়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এমন হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে আমাদের ১৪টি বছর লেগে গেলো। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থাতে গ্রেনেড হামলার বিচার যেন অনেকটা হাস্যরসভাবে চলছিলো। তার লোক দেখানো আসামি ও তার নিজের তৈরি করা সিআইডি টিম সব কিছুই যেন এক নাটকীয় রূপ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় যেন কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি না আসতে তা নিয়ে আমরা পণ করেছি, প্রতিনিয়ত আমরা তা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছে তা নিয়ে আমরা সবসময় কাজ করে যাবো। আর কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন দেশের মানুষের ক্ষতি সাধন না করতে পারে তার জন্য আমরা সদা জাগ্রত।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়