ফেসবুক অজানা লেখকের ওয়াল থেকে: “সকালে ৭ হাজার টাকার বালিশে মাথা রেখে ৮৫ হাজার টাকা দামের বই পড়ছিলাম। হঠাৎ মেঘের গুড়গুড় শব্দ শুনে ৩৭ লাখ টাকা দামের জানালার পর্দা সরিয়ে দেখলাম, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।
ইতোমধ্যে বালিশের পাশে রাখা ১৫ লাখ টাকা দামের টেলিফোন রিসিভারটি বেজে উঠলো। ফোন রিসিভ করার পর ওপাশ থেকে বন্ধু বললো, দোস্ত ৪০০ কোটি টাকার স্যাটেলাইটের কল্যাণে বিটিভি এখন চীনে।
একথা শুনে আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফিরে দেখি, হাসপাতালের ২ কোটি টাকা দামের লিফটের ভেতর ট্রলিতে শুয়ে আছি।
লিফট থেকে নামিয়ে হসপিটালের একটি কেবিনে নিয়ে শুইয়ে দিয়ে ডাক্তার আমার হৃদস্পন্দন মাপছেন ১ লাখ ১২ হাজার টাকার হেডকার্ডিয়াক স্টেথোস্কোপ দিয়ে আর বলছেন ৫২ লাখ টাকা দামের এসিটা ছাড়তে।
ডাক্তারের কথা শুনে আমার ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেলো। তখন জরুরি ভিত্তিতে ভিজিল্যান্স টিম এসে ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকার ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন দিয়ে রক্তচাপ পরীক্ষা করে ৩ লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ থেকে রিপোর্ট বের করে দিলেন।
মেশিন ও ল্যাপটপের দাম শুনে আমি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় পড়লাম। ডাক্তার দ্রুত ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট এনে মাস্ক মুখে লাগিয়ে দিলেন।
এমন সময় আত্মীয়-স্বজনরা ফল নিয়ে আমাকে দেখার জন্য রুমে প্রবেশ করে ১২ লাখ টাকা দামের টেবিলের ওপর ফলের ব্যাগটি রেখে -- ৫০ হাজার টাকা দামের চেয়ারের ওপর পা তুলে বসে আয়াকে বললেন, ফল কাটার জন্য বটি, প্লেট, চামচ নিয়ে এসো।
আয়া ১০ হাজার টাকা দামের বটি, ১ হাজার টাকা দামের প্লেট, ১ হাজার টাকা দামের কাঁটাচামচ এবং সকালের নাস্তা ১ হাজার টাকা দামের ১ হালি কলা, ১ হাজার টাকা দামের ১ হালি সেদ্ধ ডিম দিয়ে গেলেন এবং ময়লা ফেলার জন্য ১০ হাজার টাকা দামের ১টি ছোট্ট ড্রামও দিয়ে গেলেন।
দাম শুনে এবার আমার হার্টবিট গেল বেড়ে।
এমন সময় গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন এলো আর বললো, বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর থই থই। ঝড়ে আমার ৬১ লাখ টাকা দামের নারিকেল গাছ ভেঙে আমার ৭ লাখ টাকা দামের টিনের চালের ওপর পড়ে ঘর ভেঙে গেছে। এখন ঘরের মালামাল সরানোর জন্য আমার ৭ লাখ টাকা দামের কলাগাছ কেটে ভেলা বানিয়েছে।
এই কথা শুনে এবার আমার হার্টবিট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ডাক্তার দ্রুত আইসিইউ-তে নিয়ে যান।
তিনদিন পর আমি সুস্থ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৭ লাখ টাকার একটি বিল আমার এক স্বজনকে ধরিয়ে দিলে সেও অজ্ঞান হয়ে গেলে আমি তাকে নিয়ে ওই অবস্থায়ই গ্রামের বাড়ি চলে আসি।
আমি এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ৪.৫ জি গতির ইন্টারনেটে ফেসবুক ব্রাউজ করছি আর দুর্নীতি ও লুটপাটের খবর পড়ছি।”*
*লেখক - অজানা
(এক ফেসবুক বন্ধুর ওয়াল থেকে কপি+পেস্ট করে নেওয়া)
আপনার মতামত লিখুন :