শাহানাজ খুশি: রাতে দেরি করে ঘুমানো হয় বলে, সকালে সবাই ঘুমায়, বাচ্চাদের অনলাইন ক্লাস যেদিন যেদিন থাকে, উঠে পড়ে। দুই ভাই, দুই রুমে ঢুকে পড়ে। আমি কতোক্ষণ নিউজ পড়ি, কাজ করি, চা খাই, আর ওদের জন্য অপেক্ষা করি। বের হলে একসঙ্গে নাস্তা করি। আজ দুই ক্লাস একসাথে ছিলো তাদের। দেরী হবে বের হতে। ওদের বাবাও ঘুম। ভাবলাম কিছু খাই। একটা সেদ্ধ ডিম আর চা নিয়ে বসে, একবার মুখে দিতেই শ্বাসনালিতে চলে গেল, যা হবার আর কি, কাশি। বিরামহীন, দম ফেলতে পারছিলাম না। মুহূর্তেই দুই ঘর থেকে জরুরি ক্লাস ফেলে ছেলেরা বের হয়ে আসলো, ওর বাবাও। আমার কাশি কেন, এই প্রশ্নে অতিষ্ঠ করে তুললো। যতোই বলি বিষম লেগেছে, কেউ বিশ্বাস করে না। কপালে হাত দেয়, অন্য কোনো খারাপ লাগা আছে নাকি জিজ্ঞাসা করে, করোনা উপসর্গের সব প্রশ্ন শেষ করে ফেললো মুহূর্তে। কাশিতে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, পানি খেয়ে কিছু সময় পর বললাম, করোনাকালে কি খাবার নাকে, গলায় আটকালেও কাশতে পারবো না। তারা বলে, না প্লিজ খাবারটাই ঠিকমতো খেয়ো, কাশি দিও না। আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
এই অস্বাভাবিক আতঙ্কের জীবনের নাম, করোনাজীবন। হাঁচি, কাশি, জ্বর- সর্দি আর নরমাল হিসেবে নেই। পাশাপাশি বসে, এক বাটিতে মুড়ি মেখে খেতে খেতে, পা মেলে দিয়ে চা হাতে আড্ডা, এখন এ্যালবামের ছবি এখন। কারো বিষম লাগলে (শ্বাস নালিতে খাবারের কনা গেলে), কেউ আর পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে, পানির গ্লাস হাতে দিয়ে, ভুলে যায় না। কঠিন চোখে তাকায় জীবনের প্রায় সব স্বাভাবিকতা গুটিয়ে নিয়ে, আমরা এখন বেশ কঠিন অভিজ্ঞ করোনা পাহারাদার। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :