যশোর প্রতিনিধি : [২] যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্মম নির্যাতন ও মারপিটে তিন কিশোর নিহত এবং আরও ১৫ কিশোর আহতের ঘটনায় গ্রেফতার কেন্দ্রের ৫ কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রকিবুজ্জামান রোববার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার ১৫ আগস্ট বিকেলে আদালত ৫ জনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করার পরপরই তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। রোববারও তা চলমান রয়েছে।
[৩] এদিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ওই ঘটনায় সমাজ সেবা অধিদপ্তর দুই সদস্যের যে তন্ত— কমিটি গঠন করেছিল, সে কমিটি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। কমিটির প্রধান সমাজ সেবা অধিদপ্তর ঢাকার পরিচালক সৈয়দ মো. নূরুল বশির বলেন, ইতিমধ্যেই তারা যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কিশোরদের সাথে কথা বলেছেন। তদন্তের জন্য রোববার ১৬ আগস্ট তারা যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রেও যান। এরপর ঢাকায় গিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের রিপোর্ট প্রদান করবেন। ইতিমধ্যেই এ কমিটি বেশ কিছু অনিয়মের প্রমান পেয়েছে বলে জানা গেছে। কিশোরদের নির্মমভাবে মারপিটের পরও সময় মতো যদি তাদের হাসপাতালে নেওয়া হতো, তাহলে প্রানহানীর ঘটনা নাও ঘটতে পারতো বলে মনে করছে তদন্ত কমিটি। ঘটনার প্রায় ৬/৭ ঘন্টা পর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। আর নিহত তিন কিশোরকে হাসপাতালে নেওয়া হয় মৃত অবস্থায়। এ তদন্ত কমিটির অপর সদস্য হলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তর ঢাকার উপপরিচালক এমএম মাহমুদুল্লাহ।
[৪] এদিকে একই ঘটনার তদন্তে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু লাইছকে প্রধান করে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি গঠন করে, সে কমিটিও তাদের কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ তমিজুল ইসলাম খান।
[৭] বৃহস্পতিবার ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে তিন কিশোরকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১৫ কিশোর। প্রথম দিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা বলেন যে, কেন্দ্রের শিশু কিশোরদের দুটি গ্রুপের মধ্যে মারামারিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে আহত কিশোরদের বক্তব্য ও পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দয় মারপিটের কারণেই তিন কিশোর নিহত ও ১৫ কিশোর আহত হয়।
[৮] পরে নিহত কিশোর রাব্বির পিতা রোকা মিয়া বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অজ্ঞাত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :