শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:৪৬ দুপুর
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:৪৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ফরিদপুরে নামছে বন্যার পানি, রেখে যাচ্ছে ধ্বংসের ক্ষত

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি : [২] জেলার বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে সবখানে রেখে গেছে ধ্বংসের ক্ষত চিহ্ন। দীর্ঘদিন পানিবন্দী হয়ে থাকার সেই ক্ষত মেরামত করতে টাকার প্রয়োজন। টাকার জন্য অনেকে ভেঙে পড়া বাড়ি-ঘর ঠিক করতে পারছেন না। তাই বাঁধে বা রাস্তার পাঁশে এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে বিভিন্ন পরিবার।

[৩] আবার অনেকে ক্ষত মেরামত করে বাড়িতে উঠতে শুরু করেছেন। কিন্তু এখনও বাড়ির চারদিকে কাঁদাপানি। বাড়িতে আসতে হয় কাঁদাপানি মাড়িয়ে।

[৪] এই হলো ফরিদপুরের বন্যাকবলিত এলাকার বর্তমান বাস্তবতা। ফরিদপুর সদরের আলীয়বাকাদ ইউনিয়নের ভাজনডাঙ্গা, গদাধরডাঙ্গী, পূর্ব গদাধরডাঙ্গী ও খুশির বাজার সরেজমিনে দেখা গেছে এ চিত্র।

[৫] গদাধরডাঙ্গী এলাকার রোকসানা বেগম (২৪) সাংবাদিকদের বলেন, তার স্বামী বেলায়েত ফকির সড়কের পাঁশে চায়ের দোকান করে সংসার চালায়। গত এক মাস ধরে পানিতে ঘর ডুবে যাওয়ায় স্বামী ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। পানি নেমে যাওয়ার পর গত দুইদিন ধরে তারা বাড়িতে ফিরেছেন। মাটির ডোয়া, টিনের ঘরের বাড়ি তার। বন্যার পানিতে ডোয়ার ও উঠনের মাটি ধ্বসে গেছে। তিনি বাড়িঘর লেপে পুছে ঠিক করছেন থাকার উপযোগী করতে। রোকসানা বেগম জানান, বাঁধে থাকাকালীন সময়ে দুই দফায় ১৫ কেজি চাল সাহায্য পেয়েছিলেন। তা দিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছেন।

[৬] একই অবস্থা প্রতিবেশি সোনিয়া বেগমের (২৬) পরিবারের। তাঁর স্বামী মানিক খাঁন (৩৫) রিক্সা চালায়। এক ছেলে। সোনিয়া বেগম জানান, ৩৫ দিন তিনি স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে বাঁধে ছিলেন। সাহায্য হিসেবে পেয়েছেন মাত্র ১০ কেজি চাল। তা দিয়ে কোন ভাবে খেয়ে না খেয়ে কেটেছে তাদের দিন।

[৭] ৩৫ দিন বাধের উপর থাকার পর গত সোমবার বাড়িতে এসেছেন গদাধরডাঙ্গী এলাকার দুলু মোল্লা (৪৬)। দুলু মোল্লা স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়েসহ সংসারের সদস্য সংখ্যা চারজন। বাড়িতে পানি ঢোকার আগে ১০ কেজি চাল পেয়েছিলেন। আর কোন সাহায্য পাননি।

[৮] গদাধরডাঙ্গী মধ্যপাড়া এলাকার এলেম মোল্লা (৭২) বলেন, বাড়িতে পানি ঢোকার পর তিনি গবাধী পশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি কোন সাহায্য পাননি। তিনি রাতে গবাধীপশু নিয়ে বাঁধে থাকতেন। আর নিমজ্জিত বাড়ির জিনসপত্র চুরি যাতে না হয়ে যায় এজন্য তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪০) রাতে বাড়িতে থাকতেন মাচা করে। এলেম মোল্লা জানান, তিনি কৃষি কাজ করেন। বন্যার কারণে কোন সাহায্য পাননি। বড় কষ্টে কেটেছে তার দিনরাত্রী।

[৯] ভাঙ্গনডাঙ্গা এলাকার শুকুর ব্যাপরী (৪০)। শুকুর ব্যাপারীর সংসারে স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। বন্যার পানিতে বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। বাড়ি ঠিক করতে পারছেন না বলে তিনি আছেন সড়কের পাঁশেই।

[১০] ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক গগণমাধ্যমকে বলেন, বন্যায় দুই শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়া ৫০০ শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি মেরামতে সাহায্য করা প্রয়োজন।

[১১] পাশাপাশি বন্যায় ৩ কিলোমিটার ইট বিছানাে ও পাকা সড়ক ও সড়ক বিভাগের দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চার কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এজন্য কৃষকদের পুনর্বাসন করাসহ আর্থিক ও উপকরণগত প্রণোদনা দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়