নিজস্ব প্রতিবেদক: [২] যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দি তিন কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি দায়িত্ব অবহেলার দায়ে বরখাস্ত করা হয় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের সহকারি সচিব মাহমুদা ইয়াসমিন কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। যার স্মারক নাম্বার ৪১.০০.০০০০.০৩২.১৮.০৪৩.১৫-৪৫ ।কমিটির প্রধান করা হয়েছে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছে যশোর পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি (সহকারি পুলিশ সুপারের নীচে নয়), ও যশোর জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক। আগামী ৫ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[৩] এদিকে, শুক্রবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আহম্মেদ তারেক সামস নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুল হকের উপস্থিতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়। অপর দিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দি নিহতের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিহত বন্দি রাব্বির পিতা রোকা মিয়া বাদি হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় মামলা করেন। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়েছে। নিহতের ঘটনায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত¡াবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
[৪] বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মারপিটের ঘটনায় ৩ বন্দি কিশোর নিহত হয়। নিহতরা হলো-খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮), বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) একই জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তালিপপুর পূর্বপাড়ার নানু প্রামাণিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭)। এ সময় আহত হয় ১৫ জন। আহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতরা হচ্ছে জাবেদ (১৭), লিমন (১৬), আরমান (১৬), হৃদয় (১৬), সাকিব (১৬), ইশান (১৬), পাভেল (১৬), নাইম (১৬), ছাব্বির (১৬), সফিকুল (১৬), রাকিব (১৬), মাহিম (১৬), রুপক (১৭), হৃদয়-২ (১৬), ও জুয়েল (১৭)। এই ঘটনায় কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কসহ ১০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহ-তত্ত¡াবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, প্রবেশন অফিসার মুশফিকুর রহমান, শারীরিক প্রশিক্ষক শাহনূর রহমানসহ কেন্দ্রে কর্মরত ১০ জনকে শুক্রবার ১৪ আগস্ট ভোরে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। কেন্দ্রে তাদের রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ও মূল ঘটনার কারণ জানতে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের পরামর্শে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা বর্তমানে যশোর পুলিশ লাইনসের ব্যারাকে রয়েছেন।