শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১০ আগস্ট, ২০২০, ০১:০৯ রাত
আপডেট : ১০ আগস্ট, ২০২০, ০১:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা : মানুষের পক্ষে কথা বলাই প্রগতি, বাকি সব বাকোয়াজ

কাকন রেজা : প্রতিক্রিয়াশীল কাকে বলে, প্রশ্নটির উত্তর সম্ভবত নতুন করে সাজাতে হবে। উগ্রতা কী সেটারও নতুন আঙ্গিক দরকার। প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার মেরুকরণটা কারা করেছে তাদের পরিচয়টাও পুনর্বার বিবেচ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের রাজনীতিতে বিএনপির কথা উঠলেই কথিত প্রগতিশীলদের অনেকেই বলেন, ক্যান্টনমেন্টে জন্ম। নিজের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই। দলের প্রধানের বিরুদ্ধে কেউ যেতে পারে না। মতপ্রকাশের চর্চা নেই এবং আরো কতো কী। ইদানিং আবার নিজেদের নিরপেক্ষতার ভান ধরতে এ ধারায় মিনমিনে স্বরে আওয়ামী লীগকেও যোগ করেন।
অথচ এ তরফেই অন্যের মতপ্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হয় রীতিমতো নোটিশ দিয়ে। অন্তর্জালের এই দুনিয়ায় যখন সামাজিক মাধ্যম বিপ্লবের বিকল্প প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন সেখানে রাশ টানার চেষ্টা প্রগতির সাথে সাংঘর্ষিক। সঙ্গত কারণেই প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার পার্থক্যটা নতুন করে নিরূপণ করা উচিত। এর সাথে বলে নিই সামাজিকমাধ্যম কেনো বিপ্লবের নতুন প্লাটফর্ম হয়ে উঠলো। বিশ্বের অনেকগুলো দেশেই যখন একগুয়ে লোভী শাসকরা তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য রাষ্ট্রীয় শক্তি এবং দলীয় মাসলম্যানদের অবিশ্বাস্য ব্যবহার শুরু করলো। যখন রাজপথ নিষিদ্ধ হয়ে উঠলো। ঘরে থাকাও অনিরাপদ হয়ে উঠলো মুক্তিকামী মানুষের জন্য। গুম হয়ে যেতে লাগলেন, খুন হয়ে যেতে লাগলেন প্রকাশ্য থেকে। তখন বিকল্প হিসাবে উঠে এলো অন্তর্জালের দুনিয়া তথা সামাজিকমাধ্যম।

সামাজিকমাধ্যম যে প্রতিবাদের, বিপ্লবের বিকল্প মাধ্যম হয়ে উঠেছে তার প্রমাণ হলো দেশে দেশে শাসকগোষ্ঠীর একে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা। তুরস্ক থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র সব কর্তৃত্ববাদী শাসনই সামাজিকমাধ্যমকে বরদাস্ত করতে রাজি না। সমাজতান্ত্রিক দেশ চীন, সেখানে মুক্তচিন্তাতো দূর কা বাত। রাশিয়ার পুতিন আরও দুই ধাপ এগিয়ে। উত্তরকোরিয়ার কিম, যার তুলনা সে নিজেই। কর্তৃত্ববাদীতায় কিউবাও কম যায় না। হিসাব করে দেখুন, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কেউ কারো নাহি ছাড়ে। সুতরাং আগামীর বিশ্বের জন্য প্রগতি আর প্রতিক্রিয়ার ভাবনাটা নতুন করে ভাবতে হবে। চিন্তার দিক পরিবর্তন করতে হবে। গাইডলাইনের চিন্তা নয়, নিজের চিন্তাটাকে মুক্ত করতে হবে। স্বাধীনভাবে ভাবতে হবে।

সামাজিকমাধ্যমে দেখলাম একজন নিখোঁজ মানুষ ফিরে এসেছেন। তার ফিরে আসায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মুক্তচিন্তার আরেকজন। আরেক ‘প্রগতিশীল’ সেই নিখোঁজ মানুষটির রাজনৈতিক পরিচয় তুলে প্রশ্ন করলেন, এদের জন্যও আপনার সহানুভূতি জাগে? আমার প্রশ্নটা এসব প্রশ্নকর্তাদের নিয়ে। কোন ‘শীল’ হলে একজন মানুষের ঘোর বিপদে এমন প্রশ্ন করা সম্ভব! বোধের লেভেল কোন মাত্রার হলে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাস্য হয়। এদের সম্ভবত পড়া হয়ে উঠেনি মার্টিন নিমোল্যারের বিখ্যাত কবিতা। যার শেষ লাইন ছিলো, Then they came for me/ And there was no one left/To speak out for me, সহজ বাংলায় যার অনুবাদ দাঁড়ায়, ‘যখন তারা এলো আমার জন্য, তখন সেখানে আমার পক্ষে বলার কেউই ছিলো না।’ বিভাজন একটা জাতিকে শেষ করে দিতে পারে। সভ্যতা ধ্বংস হতে পারে। যার নজির রয়েছে। বিভাজনের চিন্তাটা আত্মঘাতের। নরভোজী সমাজের চিন্তা হলো অন্যের ধ্বংস আর মৃত্যুতে খুশি হওয়া। ক্যানিবাল হওয়া বা ক্যানিবালিজমের চর্চা করা সভ্য মানুষের চিন্তা নয়। অতএব, নিজের পক্ষে বলার মত যেন মানুষ থাকে, এমন চিন্তাটাই সভ্যতার চিন্তা, প্রগতির চিন্তা। বাকি সব বাকোয়াজ।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়