ফরিদ আহমেদ: ফেসবুক খুব ইন্টারেস্টিং একটা জায়গা। আর্মির অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর হঠাৎ করে সবাই ক্রসফায়ার বিরোধী হয়ে গেছেন, সবাই মানবতাবাদী এখন। কিন্তু এদের অনেকেই সময়ে সময়ে ক্রসফায়ারের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। কেউ ‘ধর্ষক’ ক্রসফায়ারে গেলে উল্লসিত হয়েছেন, কেউ ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ মারা যাওয়ায় হাততালি দিয়েছেন, কেউ বা ‘জামায়াত-বিএনপি’ খরচ হলে চেতনা আরও সমুন্নত হয়েছে বলে লাফিয়েছেন। সেই সময়ে এদের মাথার মধ্যে কাজ করেনি যে রাষ্ট্র কখনোই বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে না। মেজর সিনহাকে যেমন রাষ্ট্র হত্যা করার অধিকার রাখে না, একইভাবে কোনো চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, ধর্ষক, জামাত, বিএনপি, সর্বহারা, কাউকেই খুন করতে পারে না রাষ্ট্র।
রাষ্ট্রের কাজ অপরাধের বিচার করা, তার নাগরিকদের হত্যা করা নয়। বিচার ব্যবস্থা শ্লথগতির বলে কোনো রবিনহুডের হাতে বিচারের ভার ছেড়ে দিতে নেই। যে রবিনহুড আজকে ‘চোর', ‘ডাকাত’, ‘ধর্ষক’, ‘বিএনপি-জামাত’ খুন করবে, সেই রবিনহুড একদিন আপনাকে কিংবা আপনার পরিবারের কাউকে একই ধরনের ট্যাগ দিয়ে হত্যা করে ফেলবে। আরেকটা বিষয়। ওসি প্রদীপের ফাঁসি চেয়ে খুব বেশি লাভ কিছু নেই। সে জেলখানার জল্লাদের চেয়ে বেশি কিছু না। হত্যার সিদ্ধান্ত আসে রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায় থেকে। তার কাজ সেটাকে বাস্তবায়ন করা মাত্র। সেই বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মাঝে মধ্যে এর-ওর গলাতেও দড়ির ফাঁস পরিয়ে দেয় সে। রাষ্ট্র ব্যবস্থা কিংবা সরকার ব্যবস্থাকে স্বৈরাচারী রেখে এইসব অন্যায়ের সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। দুই একটা ঘা-তে মলমের প্রলেপ পড়বে হয়তো, পুরো শরীরের কুষ্ঠ রোগ তাতে ঢাকা পড়বে না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :