সালেহ্ বিপ্লব, বাশার নূরু : [২] বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞের মেয়ে, শিল্পী আলিফ আলাউদ্দিন জানান, সোমবার বাদ জোহর কিংবদন্তী সংগীতজ্ঞ আলাউদ্দিন আলীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আবাসস্থল খিলগাঁওর নূর-ই-বাগ মসজিদে। এরপর নিয়ে যাওয়া হবে এফডিসিতে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।
[৩] রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল (আয়েশা মেমোরিয়াল) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে আলাউদ্দিন আলী। তার মৃত্যুর খবরে শোক নেমে আসে দেশের সংগীতাঙ্গনে।
[৪] ২০১৫ সালের মাঝামাঝি আলাউদ্দিন আলীর ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর কয়েক দফায় বিদেশেও চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু আর ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে।
[৫] বরেণ্য সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গীতিকার ছিলেন তিনি। ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৭৮, ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সাল, টানা তিনবার পুরস্কৃত হয়ে সংগীত পরিচালক হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। সে রেকর্ড এখনও কেউ ভাঙতে পারেননি।
[৬] তিনি ১৯৭৫ সালে সংগীত পরিচালনায় আসেন। অল্পদিনেই তুমুল প্রশংসা লাভ করেন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ এবং ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।
[৭] তার সুর করা গানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, হয় যদি বদনাম হোক আরও, আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার, সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না, যেটুকু সময় তুমি থাকো পাশে, এমনও তো প্রেম হয় চোখের জলে কথা কয়, কেউ কোনদিন আমারে তো কথা দিলো না, আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা।
[৮] আলাউদ্দিন আলী ছিলেন একাধারে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক ও গীতিকার ছিলেন। ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে তার জন্ম। বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন।
[৯] সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্র শিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। শুরু করেছিলেন শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে কাজ করেন দীর্ঘদিন।
[১০] মরহুম সুরসম্রাটের জন্যে দোয়া চেয়েছেন তার মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন।
আপনার মতামত লিখুন :